ছবি প্রতীকী।
হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েছিলেন দুপুরে। কিন্তু এসেছে অনেক রাতে। বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের এক করোনা আক্রান্তের এমনই তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে।
অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠছে বাঁকুড়া জেলার নানা প্রান্ত থেকে। বিশেষ করে করোনা রোগীরা এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ। কেন এই পরিস্থিতি? বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, “নিশ্চয়যান প্রকল্পের অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা করোনা আক্রান্ত রোগীদের পরিষেবা দিতে চাইছেন না। এই অবস্থায় ১০২ টোল ফ্রি নম্বর পরিচালিত হাতে গোনা কিছু অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে পরিষেবা চালাতে হচ্ছে।” বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স কম রয়েছে। একটি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে দু’টি ব্লকে পরিষেবা দিতে হচ্ছে।”
করোনা রোগী পরিবহণ করতে রাজ্যের কাছে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার জন্য বাড়তি ১০টি ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার জন্য আরও ১৫টি অ্যাম্বুল্যান্স চাওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার আওতায় বাঁকুড়া সদর ও খাতড়া মহকুমার ১৬টি ব্লক পড়ে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, করোনা রোগী পরিবহণে সেখানে মোট ১৫টি অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হচ্ছে। যার মধ্যে তিনটি ওন্দা কোভিড হাসপাতালের আওতায় রয়েছে। সেগুলিতে হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়া রোগীদের বাড়ি পাঠানো বা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের রেফার করা হয়। বাকি বারোটি অ্যাম্বুল্যান্স গঙ্গাজলঘাটি, খাতড়া ও ইঁদপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। কোনও রোগীকে বাড়ি বা ‘সেফ হাউস’ থেকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা সেগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার আওতায় রয়েছে বিষ্ণুপুর মহকুমার ৬টি ব্লক। সেখানে ছ’টি অ্যাম্বুল্যান্স করোনা রোগী পরিবহণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তার মধ্যে তিনটি রাখা হচ্ছে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের রোগীদের জন্য। বাকি তিনটির মধ্যে একটি করে অ্যাম্বুল্যান্স কোতুলপুর-পাত্রসায়র, ইন্দাস-সোনামুখী ও রাধানগর-জয়পুর ব্লককে পরিষেবা দিচ্ছে।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামলবাবু বলেন, “নিশ্চয়যান প্রকল্পের অ্যাম্বুল্যান্সগুলি করোনা রোগীদের পরিষেবা দিলে সমস্যা হত না।” জেলায় প্রায় ১২০টি নিশ্চয়যান প্রকল্পের অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। কেন করোনা রোগীদের পরিষেবায় এগিয়ে আসছেন না নিশ্চয়যান চালকেরা? অল বেঙ্গল নিশ্চয়যান অ্যাম্বুল্যান্স অপারেটর ইউনিয়নের সম্পাদক বাপ্পা রায় বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আমাদের করোনা রোগীর পরিষেবায় যোগ দেওয়ার বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। যদি নিরাপত্তা-পোশাকের ব্যবস্থা করা হয়, তা হলে অবশ্যই আমরা করোনা রোগীদের পরিষেবা দেওয়া শুরু করব।”