তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র
তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া চার পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে দু’জন দলে ফিরে এসেছেন বলে দাবি করলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যদিও তেমনটা মানতে চাননি পঞ্চায়েতের সদস্যরাই। বিজেপির কটাক্ষ, পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় মিথ্যে বলছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি।
বিজেপির দাবি, শনিবার ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির ডাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান কল্যাণী গোস্বামী, উপপ্রধান পলাশ রজক-সহ ৫ জন তৃণমূল সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেন। একই সঙ্গে ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য কুমার গৌরব গোস্বামীও (তিমির) বিজেপিতে যোগদান করেন। তিমির গোস্বামী ডাবুক পঞ্চায়েতের দু’বারের তৃণমূল প্রধান কল্যাণী গোস্বামীর ছেলে। তিমিরের নেতৃত্বেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন বলেও দাবি।
মঙ্গলবার সিউড়িতে অনুব্রত অবশ্য সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘‘ডাবুকে যে চার জন বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁদের দু’জন তৃণমূলে চলে এসেছেন। জেলাতে যাঁরা বিজেপিতে যোগদান করছেন, সবাই সিপিএমের লোক। কিছু তফসিলি সম্প্রদায়, তফসিলি আদিবাসী সম্প্রদায় তারা বিজেপিতে যোগদান করেছে। তাঁরা সিপিএম করতেন। লোকসভা নির্বাচনে ভোটও করেছে বিজেপির।’’ যাঁর নেতৃত্বে শনিবার দলবদল হয়েছিল, সেই তিমির অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা সকলে তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। এখনও বিজেপিতেই আছি। কে, কী বলেছেন জানি না।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত জেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে জেলায় বিজেপির অগ্রগতি তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলছে। ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির অধীন তৃণমূল পরিচালিত ডাবুক পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধান সহ পাঁচ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিজেপিতে যোগদান নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।
এ নিয়ে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়ের মত, ‘‘বিজেপির কেউ তৃণমূলে যোগদান করে থাকলে সেটা প্রকাশ করছেন না কেন? আসল কারণ হল, তৃণমূল এখন পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৩ সদস্যের ডাবুক পঞ্চায়েতে দলগত অবস্থান ছিল তৃণমূল ১০, বিজেপি ২, সিপিএম ১। বিজেপির দাবি, সিপিএমের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য অনেক আগেই দলে যোগদান করেছেন। এখন পাঁচ তৃণমূল সদস্য বিজেপিতে যোগদান করার ফলে পঞ্চায়েতে বিজেপির পাল্লা ভারি হয়ে আট জন হয়েছে। এখন পঞ্চায়েতের রাশ কার হাতে থাকে, সে দিকেই তাকিয়ে এলাকার লোকজন।