বিশ্বভারতী
সাপ্তাহিক উপাসনায় হিন্দিতে গাওয়া হল রবীন্দ্র সঙ্গীত। এবং ওই ঘটনায় বিতর্ক দানা বাঁধল বিশ্বভারতীর আনাচেকানাচে।
উপসনাগৃহে আচার্যের বসার জন্য নির্দিষ্ট বেদি রয়েছে। আচার্যই মন্দিরের উপাসনা পরিচালনা করেন। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন উপাসনাগৃহে সাপ্তাহিক উপাসনায় আচার্যের পদে আসীন ছিলেন হিন্দি ভবনের অধ্যাপিকা মঞ্জুরানি সিংহ। উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যেহেতু মঞ্জুরানিদেবী হিন্দিভাষী এবং বাংলা সে ভাবে জানেন না, তাই এ দিন উনি উপাসনায় হিন্দিতেই নিজের পাঠ পড়েন। পাঠের শেষে দু’টি রবীন্দ্র-গান গাওয়া হয়। ‘ধ্বনিল আহ্বান...’ এবং ‘ওই আসন তলে...’-এর হিন্দি অনুবাদ এ দিন পরিবেশন করেন সঙ্গীতভবনের ছাত্রছাত্রীরা। উপাসনায় উপস্থিত সঙ্গীতভবনের এক ছাত্রী বলেন, ‘‘প্রথমে বাংলাতেই গান হওয়ার কথা ছিল। পরে আমাদের হিন্দিতে গান দু’টি অনুশীলন করানো হয়। আমরা কিছুটা অবাক হয়ে কারণ জানতে চাই। আমাদের বলা হয়, ‘তেমনই করতে বলা হয়েছে’।’’
বুধবারের উপাসনায় হিন্দিতে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাওয়ার ঘটনা মনে নিতে পারছেন না আশ্রমিক থেকে শুরু করে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, হিন্দি বা অন্য ভাষায় গান উপাসনায় দেখা যায় না। কেন রবীন্দ্র সঙ্গীতের হিন্দি অনুবাদ গাওয়ার প্রয়োজন পড়ল উপাসনার মতো ঐতিহ্যবাহী প্রথায়—সে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলছেন, ‘‘কোনও দিন উপাসনায় হিন্দি ভাষার ব্যবহার দেখিনি। আমার মনে হয়, এটা করা উচিত হয়নি।’’ আর এক আশ্রমিক সৌরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘আমার ৭০ বছরের জীবনে আমি কখনও উপাসনায় হিন্দি ভাষায় রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনিনি। আমার মনে হয়, উপাসনার রীতি ভেঙে হিন্দি ভাষার প্রয়োগ করা ঠিক নয়।’’