সফল: সিউড়ি জেলা স্কুল। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যমিকে রাজ্যের মধ্যে ভাল ফল করেছে জেলা। আর জেলার মধ্যে ভাল ফলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখল বীরভূম জেলা স্কুল। মেধা তালিকার প্রথম দশে জেলার ছ’জনের মধ্যে চার জনই এই স্কুলের পড়ুয়া। এমন সাফল্যে খুশিতে ভাসছে পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক, অভিভাবক সকলেই।
এমনিতেই জেলা স্কুল সেরা স্কুলের তালিকায় অন্যতম। নিয়ম করে প্রায় প্রতি বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় ওই স্কুলের পড়ুয়ারা স্থান পেয়ে থাকেন। জয়জয়কার অব্যাহত এ বারও। চতুর্থ, যুগ্ম ষষ্ঠ এবং সপ্তম মেধা তালিকায় স্কুলেরই চার জন। সার্বিক ফলও বেশ ভাল। স্কুল সূত্রের খবর, ৬৭০ অর্থাৎ প্রায় ৯৬% এর বেশি নম্বর পেয়েছে প্রায় ১৫ জন।
স্কুল কর্তৃপক্ষের থেকে জানা গিয়েছে, গত বছর উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম এবং পঞ্চম স্থান অধিকার করে স্কুলের ছাত্র। ২০১৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে নবম এবং ২০১৬ সালে সপ্তম এবং নবম স্থান অধিকার করে স্কুলের পড়ুয়ারা। ২০১৯ সালে রাজ্যের অন্যতম সেরা স্কুলে হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পুরষ্কৃত হয় স্কুল। তা ছাড়া গত তিন বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ১৮৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলের কোনও ছাত্র অকৃতকার্য হয়নি।
ভাল ফলাফলের জন্য পড়ুয়াদের আগ্রহ এবং শিক্ষকদের নিরলস পরিশ্রমকে কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহা। প্রধান শিক্ষক জানান, স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়মিত ক্লাস করানোর পাশাপাশি টিফিন টাইমে কিংবা ছুটির পরেও স্কুলের শিক্ষকরা পড়ুয়াদের পড়া দেখিয়ে দেন। প্রত্যেক ছাত্রের প্রতি আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়। যে ছাত্র, যে বিষয়ে আগ্রহী তাঁকে সেই বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, স্কুলের সঙ্গে অভিভাবকদেরও যুক্ত রাখার জন্য নিয়মিত সভা করা হয়। একবার পড়ুয়াদের উপস্থিতিতে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে এবং আর এক বার শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে মিটিং হয়। পড়ুয়াদের কোন কোন দিকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন সেই নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহার কথায়, ‘‘স্কুলের পড়ুয়ারা শিক্ষকদের কথা শোনে। অভিভাবকদের সঙ্গে মিটিংয়ের সময় কোন কোন দিকে পরিশ্রমী হতে হবে বলে দেওয়া হয়। ফলে নজর থাকে বাড়িতেও।’’ তা ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই দু থেকে তিন জন অভিভাবক নিয়ে মিটিং হয়ে থাকে।
নিজের ভাল ফলের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের কৃতিত্ব দিয়েছেন রাজ্যে চতুর্থ অগ্নিভ সাহা। তার কথায়, ‘‘আমার দু’জন গৃহশিক্ষক ছিল। তাছাড়া কোনও বিষয়ে সমস্যা হলে স্কুলের স্যররা সব সময় সাহায্য করেছেন। এই ফলাফল স্কুলের শিক্ষকদের জন্যই সম্ভব হয়েছে।’’ একই রকম ভাবে স্কুলকে কৃতিত্ব দিয়েছেন অর্চিষ্মান সাহা এবং রাজিবুল ইসলামরা। স্কুলের বাংলার শিক্ষক মহম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘‘স্কুলের গৌরবময় ঐতিহ্য পড়ুয়াদের স্বপ্ন দেখায়। আমরাও সেই স্বপ্নকে বুনে দিতে সাহায্য করি। ক্লাসরুমের বাইরেও পড়ুয়াদের সমস্যায় পাশে থাকার চেষ্টা করি। আমার মনে হয় পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের এই ‘টিমওয়ার্ক’-এর জন্যেই ভাল ফল সম্ভব হয়।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |