বাছাই: সোনাঝুরিতে রাস্তার ধারেই বসেছে দোকান। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
আগামী সপ্তাহ থেকে সোনাঝুরি হাট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাট কমিটি। যদিও হাট খোলার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত সরকারি অনুমতি মেলেনি। ফলে, হাটে বসা নিয়ে দোলাচলে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় ছ’মাস বন্ধ রয়েছে সোনাঝুরির হাট। চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে হাটে বসা ব্যবসায়ীদের। করোনা ভীতি কাটিয়ে আস্তে আস্তে জীবন থেকে জীবিকা সবই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে লেগেছে। আনলক পর্বে প্রায় সব কিছু প্রায় খুলে গেলেও সোনাঝুরি হাট এখনও খুলতে দেখা যায়নি। হাট কবে খুলবে, সেই আশায় দিন গুনছেন ব্যবসায়ীরা।
শান্তিনিকেতনে দেশ-বিদেশের পপ্যটকদের অন্যম আকর্ষণ প্রকৃতির কোলে বসা সোনাঝুরির হাট। প্রতি সপ্তাহের শনিবার এই হাট বসে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ওই হাটে বেচাকেনার জন্য জামাকাপড় থেকে শুরু করে ঘরোয়া অলঙ্কার, ঘর সাজানোর জিনিস-সহ বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন। বিক্রিবাটা ভালই হয়। তবে, শনি ও রবিবার সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকে ওই হাটে। সেই ছবি বেমালুম বদলে গিয়েছে করোনা এবং লকডাউনের জন্য। এ বছর মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে সোনাঝুরির হাট। হাট বন্ধ থাকায় সংসার চালাতেই মুশকিলে পড়েছেন শ’পাঁচেক বিক্রেতা, বর্তমানে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু ব্যবসায়ী পসরা নিয়ে বসছেন। তবে সংখ্যায় নগণ্য। তেমনই দুই ব্যবসায়ী বিকাশ মাল ,প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘সংসার চালাতে হাটই আমাদের ভরসা। ছ’মাস হাট বন্ধ থাকায় আমাদের পরিবার অর্থ-সঙ্কটে পড়েছে। সেই জন্য দিন কয়েক আগে থেকে আমরা হাটের রাস্তার পাশে দোকান পেতে বেচাকেনা শুরু করেছি।’’ তাঁদের সংযোজন, ‘‘হাট যদি নাও খোলে, তা হলেও আমাদের বাধ্য হয়ে এই ভাবে ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে পেটের টানে।’’
এই অবস্থায় সোনাঝুরি হাট কমিটির পক্ষ থেকে দিন কয়েক আগে একটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে কম সংখ্যক ব্যবসায়ীদের নিয়ে হাট খোলা হবে। হাট কমিটির সম্পাদক শেখ কাউসার বলেন, ‘‘হাট খোলার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। মৌখিক ভাবে প্রশাসনিক কর্তারা আপাতত সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে হাটটি খোলার অনুমতি দিয়েছেন।’’ যদিও এই বিষয়ে বিডিও (বোলপুর-শ্রীনিকেতন) শেখর সাঁই বলেন, ‘‘হাট কমিটির আবেদনপত্র আমরা পেয়েছি। সেটি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাব। হাট খোলার ব্যাপারে কোনও আলোচনা এখনও হয়নি।’’
এমন এক অবস্থায় তাঁদের কী করণীয়, ঠিক বুঝতে পারছেন না সোনাঝুরি হাটের ব্যবসায়ীরা। আনোয়ার হোসেন, শ্রাবণী সরকাররা বলছেন, ‘‘হাট কমিটির পক্ষ থেকে একবার বলা হচ্ছে হাট খোলা হবে। আবার প্রশাসন বলছে, এখন হাট খোলা যাবে না। আমরা কী করব, তাই ভেবে পাচ্ছি না। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব প্রশাসনের তরফ থেকে হাট খোলার ব্যবস্থা করা হোক, তাহলে অন্তত না খেয়ে মরতে হবে না!’’