ঝুঁকি: বৃষ্টিতে কালভার্টের উপর দিয়ে বইছে জল। পুরুলিয়ার বোরোর বড়কদম থেকে লালডুংরি যাতায়াত চলছে এ ভাবেই। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।
অতিবৃষ্টির পরে আবারও বৃষ্টি। শনিবার বিকেল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত দু’জেলায় দফায় দফায় চলল বৃষ্টি। জলমগ্ন হল দু’জেলার কয়েকটি কজ়ওয়ে।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, রবিবার সকাল পর্যন্ত বাঁকুড়া জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪৬ মিলিমিটার। তার মধ্যে শুশুনিয়ায় বৃষ্টি হয়েছে ১২৪ মিলিলিটার এবং শালতোড়া ৯৫ মিলিলিটার। এ দিকে, টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে মেজিয়ার মাতাবেল খালের জল বেড়ে মাতাবেল কজ়ওয়েতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে জল। যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। মেজিয়া ও ছাতনার মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ। গন্ধেশ্বরী নদীর উপর বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের মানকানালি কজ়ওয়ে, দ্বারকেশ্বরের উপরে মীনাপুর কজ়ওয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, রবিবার সকাল পর্যন্ত জেলায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪০.১৮ মিলিমিটার। তবে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সাঁতুড়িতে ৯৮.৬ মিলিমিটার, নিতুড়িয়াতে ৮১.২ মিলিমিটার এবং বলরামপুরে ৭০ মিলিমিটার। ভাল বৃষ্টি হয়েছে মানবাজার ২ ও বান্দোয়ান ব্লকেও।
সাঁতুড়ির রামচন্দ্রপুর-কোটালডি পঞ্চায়েতের কিনাইডি গ্রামের কুমোরপাড়ায় পুকুরের পাড় ভেঙে জল ঢুকে পড়ে গ্রামে। জলমগ্ন হয়ে পড়ে দু’টি বাড়ি। জলের তোড়ে আরও তিনটি বাড়ির দেওয়ালে বড় ফাটল ধরেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য় সাবিত্রী পালের বাড়িও রয়েছে। তিনি জানান, পাড়ার পাঁচটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার রাতেই জলমগ্ন দুই পরিবারের আট সদস্য় আশ্রয় নেন স্থানীয় হাইস্কুলের বারান্দায়। রবিবার স্থানীয় তৃণমূল নেতা সনাতন বক্সী তাঁদের স্কুল ঘরে রাখার ব্য়বস্থা করেন।
মানবাজার ২ ব্লকে বড়কদম থেকে লালডুংরি যাওয়ার রাস্তায় জোড়ের ওপরে থাকা একটি কালভার্ট জলের তলায় চলে গিয়েছিল। বেলায় জল কিছুটা নামলে লোকজন যাতাযাতের চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের আটকায়। বোরো থেকে দুর্জয়পাড়া যাওয়ার রাস্তার উপরে ছোট জোড়ের উপরে ছোটমাপের একটি কালভার্টও পুরোপুরি জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল।
বান্দোয়ানের টটকো জলাধারের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় শনিবার রাত থেকে জল ছাড়া শুরু হয়। তার জেরে বোরো থেকে জয়পুর যাওয়ার রাস্তার কজ়ওয়ে ডুবে যায়। রঘুনাথপুর থেকে আঁকড়ো যাওয়ার রাস্তায় কজ়ওযেও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর ফলে ব্লক সদর বোরো থেকে মানবাজার ২ ব্লকের আগুইবিল, সিংরাইডি, দুর্জয়পাড়া, ছোটকদম প্রভৃতি কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সাতগুড়ুম নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় বান্দোয়ান থেকে ঝাড়খণ্ডের গালুডি রাস্তার গুঁদলুবেড়ার কাছের কজ়ওয়েও জলমগ্ন হয়ে পড়ে।