সিউড়ির বড় বাগানে চলছে কমিউনিটি রেডিও রেকর্ডিং এর কাজ। —ফাইল চিত্র।
সিউড়ি শহরে প্রথমবার চালু হতে চলেছে কমিউনিটি রেডিয়ো। শহরের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অনুমোদনে শুরু হচ্ছে এই কমিউনিটি এফএম রেডিয়ো সেন্টার, যার ফ্রিকোয়েন্সি ৯০.৪।
সিউড়ির এক ঝাঁক যুবক-যুবতী দায়িত্ব নিয়েছেন এই রেডিয়ো সেন্টার পরিচালনার। জেলার মানুষের নানা সমস্যা ও তার সমাধান, তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা ও বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উঠে আসবে এই রেডিয়ো সেন্টারের মাধ্যমে। একই সঙ্গে জেলার নিজস্ব গান, নাটক-সহ অন্যান্য শিল্প মাধ্যমগুলির প্রচারও চলবে এই কমিউনিটি রেডিয়োয়।
রেডিয়ো স্টেশন সূত্রে দাবি, ইতিমধ্যেই সরকারি সমস্ত ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। পরীক্ষামূলক ভাবে স্টেশন পরিচালনার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলা সামাজিক উন্নয়ন ও শিল্প চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এই কমিউনিটি রেডিয়ো সেন্টার বিশেষ সহায়ক হবে বলে আশাবাদী কেন্দ্রের পরিচালকেরা।
রেডিয়ো সূত্রে জানা গিয়েছে, সামাজিক উন্নয়ন, বিশেষত এলাকাভিত্তিক উন্নয়নের জন্য কমিউনিটি রেডিয়ো সেন্টার তৈরিতে উৎসাহ প্রদান করে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। কিছুটা সরকারি অনুদানও পাওয়া যায়। পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক নির্দেশিকা মানতে হয় কেন্দ্রগুলিকে।
যেমন, উন্নয়নমূলক যে সমস্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হবে তার মধ্যে অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ অনুষ্ঠান নারী-কেন্দ্রিক হতে হবে। জোর দিতে হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষির মতো বিষয়গুলির উপরেও। বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র স্থানীয় শিল্পী ও শিল্পই স্থান পাবে। ‘মন কি বাত’-সহ নানা সরকারি অনুষ্ঠান ও সরকারি প্রকল্পের সুফলের দিকগুলিকে প্রচারের আলোয় আনতে হবে ইত্যাদি। এই সব শর্ত মেনেই নির্দিষ্ট অনুমোদন নিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে পথচলা শুরু করেছে সিউড়ির এই কমিউনিটি রেডিয়ো সেন্টার, এখন অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের।
সিউড়ির বড়বাগানে নির্মিত এই রেডিয়ো সেন্টার থেকে ২৫ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বেতারযোগেই সমস্ত অনুষ্ঠান শুনতে পারবেন শ্রোতারা। পাশাপাশি সেন্টারের নিজস্ব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকেই এই স্টেশনের অনুষ্ঠান শোনা যাবে।
রেডিয়ো স্টেশনের অন্যতম পরিচালক কৌশিক মণ্ডল বলেন, “যেহেতু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এই সেন্টার তৈরি হয়েছে, তাই শিক্ষার উপর বিশেষত, স্ত্রী-শিক্ষার উপর আমাদের বিশেষ জোর থাকবেই। তবে জেলার হারিয়ে যাওয়া শিল্প ও সংস্কৃতি, বীরভূমের লোকগানকে পুনরুজ্জীবিত করা ও হারানো শিল্পীদের জনসমক্ষে আনার ভাবনা রয়েছে আমাদের। শহরে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। মানুষের প্রচুর সাড়া পাব বলেই আমাদের বিশ্বাস।”