টানা ছ’দিন বন্ধ থাকার পরে অবশেষে জট খুলল ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে। মঙ্গলবার প্রকল্পের মধ্যে জমিহারা কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসে প্রশাসন এবং ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। সেই বৈঠকের পরেই আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে জমিহারা কমিটি। সব ঠিক থাকলে আজ, বুধবার থেকে ফের স্বাভাবিক ভাবে নির্মাণকাজ শুরু হবে এই নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, তিন ঘণ্টা বৈঠক শেষে আলোচনায় স্থানীয় সব জমিহারা কমিটি, প্রশাসন, ডিভিসি এবং পুলিশের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটি প্রতিমাসে এক বার করে নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা করবে। এই ধরনের কমিটি এই প্রথম গড়া হচ্ছে রঘুনাথপুরের এই প্রকল্পে। কমিটি গঠনের পাশাপাশি জমিহারাদের উপরে ক’দিন আগে সিআইএসএফ জওয়ানদের লাঠি চালানোর ঘটনায় প্রশাসন ও ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ক্ষমাও চেয়ে নেন।
গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল গেটের সামনে আন্দোলনকারী আরটিপিএস ল্যান্ড লুজারস অ্যাসোসিয়শনের সদস্যদের উপরে বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল প্রকল্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে। লাঠির আঘাতে জখম হয়েছিলেন কমিটির জনা পঁচিশেক সদস্য। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, সিআইএসএফ নয়, লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। তবে ডিভিসির সেই দাবি মানতে চায়নি জেলা পুলিশ। ওই ঘটনার প্রতিবাদে প্রকল্পের মূল গেট আটকে টানা ছ’দিন ধরে বিক্ষোভ অবস্থান চালিয়ে গেছে জমিহারা কমিটি। আন্দোলনের জেরে এই সময়ে নির্মাণকাজ পুরোপুরি বন্ধ থাকায় এক দিকে যেমন সমস্যায় পড়েছিল ডিভিসি, তেমনিই পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার বিষয়ে চাপ তৈরি হচ্ছিল প্রশাসনের উপরে।
এ দিন প্রশাসনের উদ্যোগেই জমিহারাদের নিয়ে ডিভিসির প্রকল্পের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়। ছিলেন মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজয় সেনগুপ্ত, রঘুনাথপুরের এসডিপিও পিনাকী দত্ত, সিআই সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তিনটি থানার ওসিরা, ডিভিসি-র পদস্থ কর্তারা এবং জমিহারা কমিটির পাঁচ প্রতিনিধি। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “কমিটি গঠনের বিষয়টিকে সকলেই সমর্থন জানিয়েছেন। এ ছাড়া জমিহারাদের উপরে লাঠি চালানোর ঘটনার জন্য প্রশাসন ও ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে।” ডিভিসি কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে এই লাঠি চালানোর ঘটনা কাঙ্ক্ষিত ছিল না। কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জমিহারা পরিবারগুলি। জমিহারা কমিটির সভাপতি চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রশাসন আগে কমিটি গঠন করলে এই ঘটনা ঘটত না।