শীতের সকালে কাজের পথে। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
শীত এসেছে। নামছে তাপমাত্রা। দফায় দফায় পারদ নামায় বৃহস্পতিবার ছিল জেলার শীতলতম দিন। এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে যা ২ ডিগ্রি কম। শ্রীনিকেতন হাওয়া অফিসের অনুমান সত্যি হলে আগামী দু’তিন দিনে পারদ নামতে পারে আরও খানিকটা।
বৃহস্পতিবার শুধু বীরভূম নয়, রাজ্যের অন্য অংশেও পরদ অনেকটা নেমেছে। তবে উল্লেখযোগ্য দিক হল, শীত শুরুর মরসুমে এই প্রথম ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে বীরভূমই প্রথম শীতলতম হল। গত সোমবারও যেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৮। পরের তিন দিনে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে প্রায় ৩ ডিগ্রি। এমন উপভোগ্য আবহাওয়া পেয়ে খুশি সিউড়ি, বোলপুর, দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া থেকে রামপুরহাটের বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, ‘‘এ বার সোয়োটার, মাফলার, জ্যাকেট, টুপি সহ রং-বেংয়ের পোশাক পড়ার সুযোগ হল।’’
গত তিন ধরে কাঁপন ধরানো বাতাস বইছে। বাড়ছে উৎসাহ। জেলাবাসী জানাচ্ছেন, দিন চারেক আগে রাতে মোটা চাদর, সকাল-সন্ধ্যায় পাতলা চাদর কিংবা উইন্ডচিটারে কাজ হয়ে যাচ্ছিল। সেই রেওয়াজে ইতি টেনে মঙ্গলবার থেকেই ভারী শীতের পোশাক নেমেছে। শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ২ তারিখের পর থেকেই ক্রমাগত নামছে পারদ। ২ ডিসেম্বর যেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৮, সেটাই পরের তিন দিনে ধাপে ধাপে ১৩.৪, ১২.৫ এবং বৃহস্পতিবার সকালে আরও কিছুটা নেমে হয় ১২ ডিগ্রি। তাই সন্ধ্যা গড়াতে না গড়াতেই কান-মাথা ঢাকতে হয়েছে টুপি-মাফলারে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে আরও ১-২ ডিগ্রি কমতে পারে তাপমাত্রা। তার পরে পারদ আবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হবে। কনকনে ঠান্ডা পড়তে আরও কয়েক দিন লাগবে। পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে এ রাজ্যে উত্তরের হিমেল হাওয়া ঢুকতে বাধা পাচ্ছে। বাধা সরে গেলেই পারদ আরও নামবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বোলপুরের কলেজ পড়ুয়া মেঘা সাহা, সিউড়ির তরুণ ব্যবসায়ী মুকেশ দে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জয়শ্রী দাসেরা মনে করাচ্ছেন, ‘‘ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি জুড়ে চুটিয়ে শীতের আমেজ উপভোগ করা গিয়েছে। এ বারও যেন তেমনটাই হয়।’’
শীত পুরোপুরি পড়ার আগে তাপমাত্রার ওঠানামাতে নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের পরামর্শ, তাপমাত্রা ওঠানামা করলে জীবাণুবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। সে দিকে নজর রাখতে হবে। শীতে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণও বাড়ে। শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জির সমস্যা হলে নাক ঢাকতে রুমাল বা মাস্ক ব্যবহার করার কথাও মনে করিয়েছেন চিকিৎসকেরা।