নানুর পঞ্চায়েত সমিতি

অনাস্থাতেও পদ হারালেন চিন্তা

পদত্যাগের কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনাস্থা ভোটেও হারের মুখ দেখলেন নানুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি চিন্তা মাঝি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নানুর শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০১:২৪
Share:

পদত্যাগের কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনাস্থা ভোটেও হারের মুখ দেখলেন নানুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি চিন্তা মাঝি।

Advertisement

গোটা ঘটনার নেপথ্য কারিগর রূপে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি গদাধর হাজরার ছায়ায় দেখছেন জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। অথচ এক সময় নানুরের দাপুটে নেতা কাজল শেখের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীদের হঠিয়ে চিন্তাদেবীকেই সভাপতি করেছিলেন গদাধর। পরে এলাকার রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দখলকে কেন্দ্র করে কাজলের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে গদাধরের। গদাধর যোগ দেন অনুব্রত শিবিরে। পঞ্চায়েত সমিতি-সহ চিন্তা মাঝি থেকে যান কাজলেরই নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু দু’পক্ষের সংঘাত বেড়েই চলে। তারই জেরে গদাধরকে হারাতে পরোক্ষে সিপিএমের সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ ওঠে কাজলের বিরুদ্ধে। ফলে শেষ বিধানসভায় হারতে হয় গদাধরকে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, হারের জ্বালা মেটাতেই অনুব্রত শিবির কাজলকে কোণঠাসা করার ছক কষে। তারই অঙ্গ হিসাবে পঞ্চায়েত সমিতির দখল নেওয়ার জন্য সদস্যদের নিজেদের পক্ষে টেনে নেয় অনুব্রত শিবির। গত ২৭ জুন চিন্তাদেবীর বিরুদ্ধে বোলপুরের মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, পাঁচ কর্মাধ্যক্ষ-সহ ১৭ জন সদস্য। এ দিন ছিল ওই অনাস্থারই ভোটাভুটির দিন। তার আগেই সোমবার মহকুমাশাসকের কাছে ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন চিন্তাদেবী। বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে তাঁকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী জানিয়ে দেন, চিন্তাদেবীকে সাংগঠনিক কোনও পদে বসানো হবে।

Advertisement

এ দিন পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থার পক্ষে ভোট দেন ২৫ জন সদস্য। তাঁদের অন্যতম সহ-সভাপতি মধুসূদন পাল বলেন, ‘‘চিন্তাদেবী দিনের পর দিন পঞ্চায়েত সমিতিতে আসছিলেন না। উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। সে জন্যই অনাস্থা আনা হয়েছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে তা গৃহীত হয়েছে।’’ গদাধরবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ ঠিক নয়। তাঁর দাবি, ‘‘আসলে দল-বিরোধী কাজে যুক্ত থাকার জন্যই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা চিন্তেদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন।’’ গদাধরদের এই অভিযোগের জবাবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি চিন্তাদেবী।

অন্য দিকে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য জানিয়েছে, শীঘ্রই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের নিয়ে দলগত ভাবে নতুন সভাপতি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা বলেছেন, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। নিয়ম মেনে নির্ধারিত সময়ে পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন করা হবে। তত দিন সহ-সভাপতিকে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement