পাথরডাঙা কজ়ওয়ে। নিজস্ব চিত্র
ক’দিনের টানা বৃষ্টিতে ফুলে উঠেছে শিলাবতী-সহ বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন নদ-নদী। তার জেরে কিছু কজ়ওয়ের উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। বাঁকুড়া শহরের কমরার মাঠ, সার্কাস ময়দান, মল্লেশ্বরের মতো অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাগুলিতে জল জমেছে। বাঁকুড়ার পুরপ্রশাসক মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “শহরের কয়েকটি নীচু জায়গায় জল জমলেও স্বাভাবিক নিয়মেই তা নামতে শুরু করেছে। এখনও জল জমে সমস্যা কোথাও হয়নি। পরিস্থিতির উপর আমরা নজর রাখছি।”
সিমলাপালের পাথরডাঙা কজ়ওয়ের উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করেছে শিলাবতী নদীর জল। ফলে, হাড়ামাসড়া হয়ে লক্ষ্মীসাগর-বাঁকুড়া রাস্তায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন তালড্যাংরা ও সিমলাপাল ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন। বিশেষ প্রয়োজনে তাঁদের প্রায় সাত-আট কিলোমিটার ঘুরে সিমলাপাল হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তবে শুক্রবার লকডাউনের জন্য যাতায়াত তেমন ছিল না। তবুও তাঁদের নানা প্রয়োজনে বেরোতে হয়েছে, তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই প্রেক্ষিতে ফের ওই এলাকায় বড় সেতুর দাবি তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। মহকুমাশাসক (খাতড়া) রবি রঞ্জন বলেন, ‘‘পাথরডাঙা ছাড়া, রাস্তার উপরে আর কোনও কজ়ওয়ে বা সেতুতের জল উঠে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে খবর নেই। পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা নিরঞ্জন লোহার, সন্দীপ পাত্রেরা বলেন, ‘‘ফি বছর একটু ভারী বৃষ্টি হলেই জলের তলায় চলে যায় পাথরডাঙার ওই কজ়ওয়ে। ফলে, লক্ষ্মীসাগর-বাঁকুড়া রাস্তায় সমস্ত রকমের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়েন ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী ভেলাইডিহা, তরুপুর, বনকাটা, লক্ষ্মীসাগর এলাকার বাসিন্দারা। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে ওই কজ়ওয়ে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এত দিনেও সেতু তৈরি করা হল না। এখন জল নামা না পর্যন্ত আমাদের ভোগান্তির মধ্যে থাকতে হবে।’’
বিডিও (সিমলাপাল) রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, ‘‘এই নদীতে বন্যা হলেও দীর্ঘ স্থায়ী নয়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে গেলে শীঘ্রই জল নেমে যায়। ফলে, সমস্যা বেশি দিন স্থায়ী হয় না। তাছাড়া পাথরডাঙা থেকে সাত-আট কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাস্তার উপরে সিমলাপালে শিলাবতী নদীর উপরে আরও একটি কজ়ওয়ে রয়েছে। পাথরডাঙার কজ়ওয়ে ডুবে গেলেও সিমলাপালের কজ়ওয়ে দিয়ে যাতায়াত করা যায়। সেটি এ বার ডোবেনি।’’
এ দিকে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বাঁকুড়া শহর ছুঁয়ে বয়ে যাওয়া দু’ই নদী গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বরে। বৃহস্পতিবারই ভাদুল এলাকায় দ্বারকেশ্বরের কজ়ওয়ের উপর দিয়ে জল যাচ্ছিল। এ দিন ওই নদীর উপরে মীনাপুর এলাকার কজ়ওয়েটিও জলের তলায় চলে যায়। গন্ধশ্বরীর জলস্রোত বেড়ে যাওয়ায় বাঁকুড়ার মানকানালি এলাকায় ওই নদীর উপর গড়া কজ়ওয়েও জলের তলায় চলে গিয়েছে।