বাহারি: রঘুনাথপুরে জয়চণ্ডী পাহাড়ের কাছে প্রদর্শনী ক্ষেত্র। ছবি: সঙ্গীত নাগ
কালিম্পং ঘুরতে গিয়ে পরিকল্পনাটা মাথায় এসেছিল। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক দেখেছিলেন, পাহাড়ের আকর্ষণ কী ভাবে বাড়িয়েছে বাহারি ক্যাকটাস। ওই সংস্থা রঘুনাথপুরের জয়চণ্ডী পাহাড়েও তৈরি করেছে দেশি ও বিদেশি ক্যাকটাসের আস্ত একটি বাগান। সম্প্রতি বাগানটি খুলে দেওয়া হয়েছে পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য।
বছর খানেকের চেষ্টায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যেরা নিজেদের পরিশ্রমেই তৈরি করেছেন ক্যাকটাস ও ‘জেরোফাইট’ (খুব কম জলে যে গাছ বেড়ে ওঠে) প্রজাতির গাছের বাগান। অভিজ্ঞতা থেকে তাঁদের সাহায্য করেছেন রঘুনাথপুরের উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক তামসী কোলে। তিনি জানান, প্রায় তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বাগান তৈরি করতে। পুরো খরচটাই বহন করেছেন তিনি ও সংস্থার সদস্যেরা মিলে।
ক্যাকটাস বা ‘জেরোফাইট’ প্রজাতির গাছ মূলত জন্মায় এমন জায়গায়, যেখানে আবহাওয়া রুক্ষ ও উষ্ণ। কম বৃষ্টিপাত হয়। তামসীদেবী জানান, ওই সংস্থার সদস্যদের নিয়ে গত বছর কালিম্পং বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে ক্যাকটাসের বাগান দেখে আশ্চর্য হয়ে যান তাঁরা। তামসীদেবীর কথায়, ‘‘তখনই ভেবেছিলাম, জয়চণ্ডীতেও প্রচুর পর্যটক ঘুরতে আসেন। কিন্তু সেখানে পাহাড় ছাড়া, কিছুই নেই। পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য সেখানেও একটা ক্যাকটাসের বাগান গড়া যায়।’’
কালিম্পং থেকে ফিরেই শুরু হয়েছিল তোড়জোড়। জয়চণ্ডী পাহাড়ের যুব আবাসের দিকেই প্রায় এক বিঘা জায়গাও পাওয়া যায়। দশ মাসের পরিশ্রমে বাগান তৈরি হয়েছে। তামসীদেবীর নিজের সংগ্রহে ছিল দেশি বিদেশি হরেক প্রজাতির ক্যাকটাস। সেগুলিও জয়চণ্ডী পাহাড়ের বাগানে দিয়েছেন তিনি।
সংস্থার অন্য সদস্যদের মধ্যে সুরঞ্জন সরকার, সাগর বন্দ্যোপাধ্যায়রা জানান, তিনশোর বেশি প্রজাতির ক্যাকটাস ও ‘জেরোফাইট’ দিয়ে বাগান তৈরি হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্যাকটাস সংগ্রহ করেছেন সংস্থার সদস্যেরা। আরও কিছু ক্যাকটাস আনা হয়েছে তাইল্যান্ড, আফ্রিকা ও আমেরিকা থেকে। সংস্থার সদস্যেরা জানাচ্ছেন, পর্যটকদের মনোরঞ্জন তো বটেই, বছরের অন্য সময়ে পাহাড়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে আসা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এই বাগান থেকে উপকৃত হবেন।