সাঁইথিয়ার বাড়িতে সিএবি প্রতিনিধি দল। ছবি: অনির্বাণ সেন।
অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলের ক্রিকেটার শুভ্রজিৎ দাসকে মারধরের ঘটনায় পুলিশ সোমবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করল না। এ দিন তাঁকে দেখতে সিএবির দুই প্রতিনিধি অচিন্ত্য কুমার ঘোষ ও অশোক ভার্মা সাঁইথিয়ায় তাঁর বাড়ি যায়। সঙ্গে ছিলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার জেলা সম্পাদক বিদ্যাসাগর সাও। সিএবির সদস্যরা দাবি করেন, ‘‘যে বা যাঁরাই ওকে মেরেছে তারা ভীষণ অন্যায় করেছে। তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি পাওয়া উচিৎ। সিএবি ওর পাশে আছে।’’
সিএবি কমিটির ওই দুই সদস্য এ দিন বিকেল তিনটে নাগাদ শুভ্রজিতের বাড়িতে এসে পৌঁছন। তাঁর মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে শুভ্রজিতের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বলেন, ‘‘আমরা গতকাল টিভির খবর দেখে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। রাত্রেই সিএবির কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরুপ দে আমাদেরকে সাঁইথিয়া আসার জন্য বলেন।’’
কেমন আছেন শুভ্রজিৎ?
শুভ্রজিৎ বলেন, ‘‘আমার কোমরে একটু ব্যাথ্যা হচ্ছিল। তাই ভোটের আগে বাড়ি চলে এসেছিলাম বিশ্রাম নিতে। রবিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে একটু বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ওরা আমার উপর চড়াও হয়ে পাথর ছুড়ে পায়ে মারল। কেন মারল বলতে পারব না। এখন খুব টেনশনে আছি। আমার বাবা-কাকারা সবাই এখানে ব্যবসা করেন।’’
শুভ্রজিতের মা সীমা দেবী বলেন, ‘‘আমি দোষীদের শাস্তি চাই। আমার ছেলে খেলা ছাড়া কিছু জানে না। ও কোনও ঝুট ঝামেলাতেও থাকে না। সারা রাত আতঙ্কে কাটিয়েছে।’’ কলকাতা থেকে সিএবির সদস্যরা আসার আগে জানতেন শুভ্রজিৎ হাসপাতালে ভর্তি আছে। পরে তাঁরা জানতে পারেন শুভ্রজিৎ বাড়িতে রয়েছে। অচিন্ত্যবাবু বলেন, ‘‘এখনও এক্সরে রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তবে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি যেন ওর পায়ের আঘাত গুরুতর না হয়। ও তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক।’’
দোষীদের গ্রেফতার বা শাস্তির ব্যাপারে তাঁরা কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এসপি বা পুলিশের কাছে যাচ্ছি না। ফিরে গিয়ে বিশ্বরূপবাবু ও সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়কে জানাব। সিএবি ওর পাশে আছে। সব রকম সহযোগিতা করা হবে।’’ শুভ্রজিতের চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতা নিয়ে যেতে চাইলে, সে ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তাঁরা।
এ দিন অচিন্ত্যবাবুদের ফিরে যাওয়ার ঘন্টা খানেক পর বামফ্রন্টের তিন বিধায়ক, সাঁইথিয়ার ধীরেন বাগদি, ময়ূরেশ্বরের অশোক রায় ও নলহাটির ফব-র দীপক চত্তোপাধ্যায় কয়েকজন বাম সমর্থককে নিয়ে তাঁকে দেখতে আসেন। তাঁরা শুভ্রজিৎ ও তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তাঁরা জানান, একজন উদীয়মান ক্রিকেটারকে এরকম অন্যায়ভাবে মারধোর করা কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।
ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও অপরাধীদের কেন গ্রেফতার করা হল না, সে প্রশ্ন তোলে বামেরা। তাঁরা সাঁইথিয়া থানায় ও প্রয়োজনে এসপির কাছে যাওয়ার কথা বলেন। বলেন, ‘‘যদি পুলিশ এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’’
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোজে তল্লাসি চলছে।