ঘটনাস্থলে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ও বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
‘উষরমুক্তি’ প্রকল্পে ১০০ দিনের কাজ চলছিল বাঁকুড়ার বারিকুল থানার ধজুড়ি গ্রামে। বুধবার সকালে ওই গ্রামের কাছে এক শ্রমিকের কোদালের কোপে মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে পড়ল একটি প্লাস্টিকের জেরিক্যান। তা খুলতে, ভিতর থেকে বেরিয়ে পড়ে বেশ কিছু গুলি ও বিস্ফোরক। সঙ্গে সঙ্গে কাজ বন্ধ করে দেন শ্রমিকেরা। খবর যায় বারিকুল থানায়। পৌঁছন বারিকুল থানার পুলিশকর্মীরা। যান এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা। পরে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ির নেগুড়িয়া সিআরপি ক্যাম্প থেকে বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াডের কর্মীরা গিয়ে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করেন।
জেলা পুলিশের একটি সূত্রের খবর, উদ্ধার করা জিনিসের মধ্যে রয়েছে ৩০৩ রাইফেলের ২৮ রাউন্ড গুলি, ১২ বোরের গুলি ১৪ রাউন্ড, ১২ বোরের খোল ১৮টি, ৯ এমএম গুলি ৯ রাউন্ড, ১০০ গ্রাম গান পাউডার ইত্যাদি। এসডিপিও বলেন, ‘‘একটি জেরিক্যানের ভিতরে ৪০টি ডিটোনেটর এবং বেশ কিছু গুলি, বিদ্যুতের তার প্রভৃতি রাখা ছিল। বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াডের সদস্যেরা এসে ডিটোনেটরগুলি নষ্ট করে দেন। এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে।’’
স্থানীয় বারিকুল পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের ধনঞ্জয় মাহাতো বলেন, ‘‘গত সাত দিন ধরে গাছ লাগানোর জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছে। এ দিন জেরিক্যান ভর্তি গুলি-বিস্ফোরক মেলায় শ্রমিকেরা ভয় পেয়ে যান। পুলিশ গিয়ে সে সব নিয়ে যেতেই ফের কাজ শুরু হয়েছে।’’
এক সময়ে বারিকুল এলাকার জঙ্গলে মাওবাদীদের ডেরা ছিল। রাজ্যে পালাবদলের আগে থেকেই বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের গতিবিধি বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, উদ্ধার করা গুলি ও বিস্ফোরকগুলি সম্ভবত মাওবাদীরা মাটির তলায় পুঁতে রেখেছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না এসডিপিও। তিনি বলেন, ‘‘এক সময়ে বারিকুল থানার জঙ্গল ঘেরা বিভিন্ন জায়গায় মাওবাদীদের ঘাঁটি ছিল। সম্ভবত তখন বিস্ফোরক মাওবাদীরা মাটির নীচে চাপা দিয়ে রেখেছিল।’’