ব্রিদ অ্যানালাইজার হাতে পরীক্ষায় পুলিশ। শনিবার বোলপুরে।— নিজস্ব চিত্র
মদ খেয়ে গাড়ি চালালে আর পার পাওয়া যাবে না। ওত পেতে রয়েছে বীরভূম পুলিশ! তাদের হাতিয়ার ‘ব্রিদ অ্যানালাইজার’।
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর প্রবণতা রুখতে কলকাতায় আগেই এই বন্দোবস্ত রয়েছে। এ বার জেলাতেও পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হল ‘ব্রিদ আনালাইজার’-এর ব্যবহার। এই বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে চালকের নিঃশ্বাস থেকেই বোঝা যাবে তিনি মদ্যপ কিনা। শনিবার থেকে ওই যন্ত্র হাতে অভিযানে নেমেছে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “ শনিবার পরীক্ষামূলক ভাবে বোলপুর ও শান্তিনিকেতন থানা এলাকার একাধিক মোড়ে ব্রিদ আলাইজার দিয়ে বিভিন্ন গাড়ির চালকদের বিশেষ করে মোটরবাইক চালকদের পরীক্ষা করা হয়েছে।” সব ঠিকঠাক থাকলে জেলার সদর সিউড়ি এবং রামপুরহাটেও এই ব্যবস্থা দ্রুত চালু হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, বেপরোয়া মোটরবাইক চালিয়ে দুর্ঘটনা ইদানীং খুবই বেড়েছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে হেলমেট না পরা এবং চালকদের একাংশের মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর প্রবণতা। পথ দুর্ঘটনা ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা প্রসূত ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচিকে বাস্তব রূপ দিতে কলকাতার পাশাপাশি জেলাগুলিতেও তৎপর হয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই মদ্যপ অবস্থায়ে গাড়ি চালানো নিয়ন্ত্রণ করতে কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় ওই যন্ত্র নিয়ে অভিযানে নেমেছে রাজ্য পুলিশ। এ বার বীরভূমেও তা চালু হল। শনিবার ওই বিশেষ যন্ত্রের নিয়ে সদলবলে অভিযানে নামেন এসডিপিও (বোলপুর) অম্লানকুসুম ঘোষ। বোলপুর-শান্তিনিকেতন, দুই থানা এলাকার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত মোড়ে ‘ব্রিদ আলাইজার’ যন্ত্র নিয়ে চালকদের পরীক্ষা করে পুলিশ।
জেলা পুলিশের একটি সুত্রের দাবি, সাম্প্রতিক অতীতে জেলায় একাধিক পথ দুর্ঘটনার পিছনে মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর কথা উঠে এসেছে। এমন দুর্ঘটনা এবং তার জেরে প্রাণহানি বাগে আনতে পুজোর পরেই জেলায় ‘ব্রিদ আনালাইজার’ দিয়ে অভিযানে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশ সুপার। তাঁর কাছে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে লক্ষ্মীপুজো থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হল সেই ব্যবস্থা। রাত আটটা থেকে দফায় দফায় ‘ব্রিদ আনালাইজার’ নিয়ে কখনও লজ মোড়ে, কখনও বা চিত্রা মোড়ে গাড়ি ও বাইক পরীক্ষা অভিযানে নামে পুলিশ। রাত একটু বাড়তেই, শান্তিনিকেতনের একাধিক মোড়েও পরীক্ষা করতে দেখা গেল পুলিশকে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এই যন্ত্রের হাত থেকে কেউ ছাড় পাবে না।”