সংগ্রহ: মাঝরাস্তায় বই চাইছেন পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
‘বই কখনও পুরনো হয় না। তাই ফেলে দেবেন না। আমাদের দিন। আমরা পুরনো বইয়ের লাইব্রেরি করব। প্রয়োজন মতো সেখান থেকেই সকলে বই পাবেন। উপকার হবে দুঃস্থদের।’
— এই শ্লোগান নিয়ে দিন পনেরো ধরে রামপুরহাটের পথে পথে ঘুরছে রামপুরহাট বালিকা বিদ্যালয় এবং রামরপুরহাট জীতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের ছয় পড়ুয়া। পাঠ্য এবং গল্পের বই মিলিয়ে ইতিমধ্যেই ওদের ঝুলিতে এসেছে প্রায় পাঁচশো বই!
এমন ভাবনায় সাড়াও পড়েছে। কেউ ইতিমধ্যেই দিয়েছেন বই। কেউ দিয়েছেন পাশে থাকার আশ্বাস। বাড়ির ছেলেমেয়েদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবকেরাও।
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা এই পড়ুয়ারা ফলপ্রকাশের পরে ঠিক করতে পারছিলেন না পুরানো বইপত্র দিয়ে কী করবেন। অভিজ্ঞতা বলছে, কেউ বাড়িতেই বই ফেলে রাখে। তো কেউ বিক্রি করে দেয়। সিলেবাস পাল্টে গেলে তো কথাই নেই! এই সময়ে সৈয়দ ফিরদৌসী কবির, প্রিয়াঙ্কা ঘোষেরা ঠিক করে পুরানো বই দিয়ে লাইব্রেরি তৈরি করবে। ভাবামাত্র কাজ। প্রত্যেকে প্রথমেই নিজের নিজের বই লাইব্রেরির জন্যে দেয়। কিন্তু, ওই ক’টা বই দিয়ে আর কী হবে! আরও বই চাই। তখনই লিখে ফেলে লিফলেট। সেটার ফটোকপি করে শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে দিচ্ছে ওরা। রয়েছে ফ্লেক্স, শহরে পোস্টার সাঁটিয়ে প্রচারও। সব কাজই চলছে ‘পুস্তক সংগ্রহ সোসাইটি’র নামে।
এত বই রাখা হবে কোথায়? এর উত্তরই খুঁজছে উদ্যোগী ওই পড়ুয়ারা। শহরের কোথাও একটি ঘর চেয়ে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাসের কাছে আবেদনও করেছে ওরা। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসকও। তবে এই প্রথম নয়। এই পড়ুয়াদের দলটি ২০১৫ সালে নেপালে ভূমিকম্পের সময়ে ঘুরে ঘুরে টাকা তুলে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা মহকুমাশাসকের কাছে তুলে দিয়েছিল।