শুনশান পাড়ুইয়ের রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির স্মারকলিপি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল পাড়ুই। বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ, তাদের কর্মসূচি ভন্ডুল করতে শাসকদল এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। তৃণমূল অভিযোগ মানতে চায়নি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়। পরে এসডিপিও (বোলপুর)-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ছ’জনকে আটক করা হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে এ দিন জেলার সমস্ত থানায় স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ছিল বিজেপি-র। এ দিন সকালে দলের সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি সামাদ শেখের নেতৃত্বে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা পাড়ুই থানার দিকে যাচ্ছিলেন।
বিজেপি-র অভিযোগ, হঠাৎই পাড়ুই পঞ্চায়েতের দিক থেকে জনা কুড়ি তৃণমূল কর্মী বোমাবাজি শুরু করে। প্রাণের ভয়ে বিজেপি কর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। সেই সময় ঘটনাস্থলে পাড়ুই থানার পুলিশ থাকলেও তারা কিছু করেনি বলে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি।
ঘণ্টা দেড়েক ধরে ওই এলাকায় বোমাবাজি হয় বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার জেরে বিজেপির কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত হয়ে যায়। পরে এ দিন দুপুরে দলের জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের উপস্থিতিতে তাঁরা তাঁদের কর্মসূচি পালন করেন। এ দিন সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পাড়ুই বাজারে সিউড়ি-বোলপুর রাস্তায় বেশ কিছু বোমার দাগ। আতঙ্কে অধিকাংশ দোকান বন্ধ। কিছু দোকান খোলা থাকলেও সেগুলির শাটার নামানো।
ব্যবসায়ীদের কয়েক জন বলেন, ‘‘বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ হঠাৎই বোমাবাজি শুরু হয়। পরের পর বোমার তীব্র শব্দে এলাকা কেঁপে ওঠে। চারপাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। প্রাণ বাঁচাতে দোকান বন্ধ করে দিই।’’ দিনের ব্যস্ত সময়ে তখন পাড়ুই বাজারে অনেক লোকজন। বোমাবাজি শুরু হওা তাঁরাও এ-দিক ও-দিক ছুটে পালান। স্থানীয় এক ওষুধের দোকানি বলেন, ‘‘ভয়ে আমরা দোকানের শাটার অর্ধেক লাগিয়ে ভিতরে ছিলাম। প্রত্যেক বুধবার আমার দোকানে কলকাতার এক চিকিৎসক বসেন। কিন্তু এই ঘটনার জন্য আমরা দোকান বন্ধ করে দিয়েছি। যে ক’জন রোগী এসেছিলেন, তাঁদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
সামাদ শেখের দাবি, ‘‘আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার জন্যই তৃণমূল এই কাজ করেছে। তবে, বোমাবাজি দেখে আমরা কেউ ভয়ে পালাইনি। কেবল কিছুটা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম।’’ যদিও বিজেপির এই অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল। দলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। আর ১৫ দিন পরে দুর্গাপুজো। এই উৎসবের মরশুমে থানায় থানায় অবরোধ করে বিজেপি শান্ত পশ্চিমবঙ্গকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।’’