উপাচার্যের কাছে। —নিজস্ব চিত্র
নিয়ম থাকতেও এত দিন তাতে কেউ-ই কান দেননি। আদালতের চাপে পড়ে শেষমেশ পরিবেশ বিধি মেনে চলার আশ্বাস দিচ্ছেন তাঁরা। সেই ‘আশ্বাস’ শুনে পরিবেশ আদালত গলবে কিনা, তার উত্তর মিলবে আগামী মঙ্গলবার। কিন্তু, তার আগেই নিজেদের দাবির পক্ষে সমর্থন আদায় করতে সক্রিয় হল বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি।
শনিবার অবস্থান-বিক্ষোভ করে পরিবেশ বিধি মেনে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘ভাঙা মেলা’ বসানোর অনুমোদন চেয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানাল তারা। শুধু তা-ই নয়, জাতীয় পরিবেশ আদালতে মঙ্গলবারের শুনানিতে বিশ্বভারতী যাতে তাদের সংগঠনের পাশে থাকে, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্তের সঙ্গে দেখা করে সেই আবেদন জানিয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিল তারা। যদিও স্বপনবাবু এ দিনই বলেছেন, “মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী এবং পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনেই পৌষমেলার আয়োজন হবে। তবে, পরবর্তী শুনানিতে আদালতের কাছে মেলার মেয়াদ আরও এক দিন বাড়ানোর আর্জি জানাব আমরা।” তাঁর এই অবস্থানই স্পষ্ট করে দিয়েছে, ‘ভাঙা মেলা’য় সায় নেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।
পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তের দায়ের করা মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মহর্ষির ট্রাস্ট ডিড মেনে তিন দিনেরই পৌষমেলা করতে হবে। যাবতীয় পরিবেশ বিধি মানার পাশাপাশি আয়োজকদের প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে মেলায় গ্রামীণ কুটির শিল্পকেই গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছে আদালত। সেই হিসেব মতো আগামী ৭-৯ পৌষ (২৩-২৫ ডিসেম্বর) শান্তিনিকেতনে ওই মেলা বসার কথা। কিন্তু, ওই নির্দেশের পরেই বিপদ গুণেছেন এত দিন ধরে ‘ভাঙা মেলা’য় অভ্যস্ত বোলপুর ও শান্তিনিকেতন এলাকার ব্যবসায়ীরা। বিপুল ক্ষতির আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে আর্জি জানিয়েছেন তারা। সংগঠনের দাবি, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলা চালাতে দেওয়া হোক। পরিবর্তে তারা সমস্ত পরিবেশ বিধি মেনে চলবেন। মঙ্গলবার সেই আর্জির শুনানিতে বিশ্বভারতীকে পাশে পেতে চায় ওই সংগঠন।
বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ, সভাপতি মুর্শেদ নেওয়াজ খান এবং শতাধিক ব্যবসায়ীরা এ দিন দুপুরে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় দফতরে যান। সংগঠনের পক্ষে সুনীলবাবু বলেন, ‘‘পৌষ উৎসবে আসা ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভাঙা মেলা চালানোর আর্জি জানানো হয়েছে। পরিবেশ বিধি-সহ আদালতের নির্দেশ মেনে মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব স্তর উদ্যোগী হলে কোনও পক্ষের কোনও সমস্যা থাকবে না।’’ সংগঠনের আশঙ্কা, স্রেফ তিন দিনের মেলা হলে আগামী দিনে পৌষমেলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।