থানার সামনে অভিভাবকেরা। নিজস্ব চিত্র
বোলপুরের স্কুলে লেগিংস-কাণ্ডে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিলেন অভিভাবকেরা। সিউড়িতে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলাশাসক না থাকায় অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রশান্ত অধিকারীর হাতে অভিযোগপত্র জমা দেন অভিভাবকেরা।
অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন ওই অভিভাবকেরা। তাঁদের দাবি, ঘটনা শোনার পরে সঠিক তদন্ত করা হবে বলে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক। প্রশান্তবাবু পরে বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা সে দিনের ঘটনা সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমি অভিযোগটি জেলাশাসককে পাঠিয়ে দেব।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলাশাসকের তৈরি করে দেওয়া তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বুধবার বোলপুরের মকরামপুরের ওই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে গিয়ে তদন্ত করে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তা রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, স্কুলেই ছাত্রীদের লেগিংস খুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আশ্বাস দিয়েছিলেন, অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।
প্রশাসনের পাশাপাশি এ দিন এক অভিভাবক শান্তিনিকেতন থানাতেও স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিভাবকের দাবি, তাঁর মেয়েকেও সোমবার স্কুলে লেগিংস খুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকে সে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে জানানো হয়, তাঁর মেয়ে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওই মহিলার অভিযোগ, ‘‘ফোন পেয়ে আমি স্কুল থেকে বাচ্চাকে আনতে গেলে, সেখানে স্কুলের তরফে আমাকে সে দিনের ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে। শান্তিনিকেতন থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
সোমবারের ওই ঘটনায় ক্লাস ওয়ানের এক ছাত্রীও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার থেকে আমার মেয়ে অসুস্থ। ক্লাস টেস্ট দিতে পারেনি। অথচ স্কুলের তরফ থেকে আমার মেয়ের একবারও খোঁজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।’’ অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, স্কুলের তরফে বাইরের লোকের, বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে পড়ুয়াদের। এ দিন স্কুলের বাইরে একটি নোটিস লাগিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও জারি করে ওই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি। ফলে, স্কুলের প্রিন্সিপালের সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এ দিন স্কুলের সামনে গান গেয়েও প্রতিবাদ করতে দেখা যায় এক বাউল শিল্পীকে।