পুরুলিয়ার লধুড়কার সভায় মিঠুন চক্রবর্তী। — টুইটার থেকে নেওয়া।
‘ফাটাকেষ্ট’র সংলাপ নয়, পুরুলিয়া দেখল ‘সংগঠক’ মিঠুন চক্রবর্তীকে। বুধবার পুরুলিয়ার লধুড়কায় মিঠুন জনসংযোগের ঢঙে সভা করলেন। জনতার কাছ থেকে সমস্যার কথা শুনে বিঁধলেন রাজ্য সরকারকে। মিঠুনের সভাকে ‘বিচিত্রানুষ্ঠান’ বলে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।
বাংলায় বুথস্তরে বিজেপির সংগঠনের আসল ছবি কী, সরেজমিনে তার খোঁজ নিতে রাঢ়বঙ্গ সফর করার কথা ছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির অন্যতম সদস্য মিঠুনের। কিন্তু রাজভবনে নতুন রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সুকান্তের যাওয়ার কথা ছিল, তাই মিঠুনকে একাই বেরোতে হয়। পরে জানা যায়, রাজভবনেও যাননি সুকান্ত। মিঠুনের সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। বুধবার সকালে পুরুলিয়ার লধুড়কার জনসভায় হাজির হতেই উপস্থিত জনতা মিঠুনের কাছে তাঁর অভিনীত জনপ্রিয় ছবির সংলাপ শোনার আবদার করে। কিন্তু ‘সংগঠক’ মিঠুন সেই আবদার মেটাননি। তিনি বলেন, ‘‘ডায়লগ শোনাতে অন্য দিন আসব। আজ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলতে এসেছি।’’
এর পরেই মিঠুন সটান চলে আসেন জনতার সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগে। শুনতে চান মানুষের সুবিধা, অসুবিধার কথা। মিঠুনকে দেখতে এসে স্থানীয় বাসিন্দা স্বপ্না মুদি বলেন, ‘‘আমি সরকারি ঘর পাইনি। অনেকেই ঘর পেয়েছে, কিন্তু আমিই বঞ্চিত।’’ সে কথা শুনে মিঠুন রাজ্য সরকারকে তুলোধোনা করেন। কেন্দ্রীয় সরকারি আবাস যোজনার নাম বাংলা আবাস যোজনা করার জন্যও কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। একই ভাবে এক বৃদ্ধা জানান, তাঁর ষাট বছর বয়স হলেও তিনি পেনশন পান না। অন্য এক জন অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘চপের দোকান করেছি। কিন্তু চপ বিক্রি হচ্ছে না।’’ মিঠুন তাঁকে ঢপ মিশিয়ে চপ বিক্রি করতে বলেন।
তৃণমূল অবশ্য মিঠুনের কর্মসূচিকে পাত্তা দিতে নারাজ। উল্টে, একে বিচিত্রানুষ্ঠান বলে কটাক্ষ করেন শাসকদলের নেতারা। তৃণমূলের পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জনগণকে বোকা বানাতে চাইছে বিজেপি। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বিজেপির কেন্দ্র সরকারই আটকে রেখেছে। আর উনি এখানে এসে জলসা করছেন!’’
প্রসঙ্গত, মিঠুন-সুকান্ত জুটিকে সামনে রেখে বুধবার থেকে টানা পাঁচ দিন পাঁচটি জেলায় পর পর জনসভা করার পরিকল্পনা নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু প্রথম দিনের সফরেই বাদ পড়ে গেলেন সুকান্ত। যদিও তাতে কর্মসূচি আটকায়নি। জ্যোতির্ময়কে সঙ্গে করে মিঠুনই নেমে পড়েছেন ময়দানে। বিজেপির অন্দরের খবর, তৃণমূল স্তরে দলের সংগঠনের হাল কেমন, তা সরেজমিনে ঘুরে দেখে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাবেন মিঠুন।