রাজ্যবাসীকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
কেন্দ্রীয় সরকারের এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জী) প্রকল্প নিয়ে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকায় সকলের নাম আছে কি না, নামের বানান ঠিক আছে কি না, সব নিজেকে সশরীরে গিয়ে দেখে আসার পরামর্শ দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে এনআরসি-র প্রসঙ্গে তুলে সকলকে সতর্কও করলেন।
বুধবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারের জমির পাট্টা বিলি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন মমতা। সেখানেই তিনি জানান, রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা চলবে। সকলকে সশরীরে গিয়ে ভোটার তালিকায় নিজের এবং নিজের পরিবারের সদস্যদের নাম দেখে আসার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘‘যাতে এনআরসির নাম করে আপনাদের নাম কোথাও কেউ কেটে না দিতে পারে, তাই এখন থেকে নিজে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের নাম তুলে আসবেন। দেখে আসবেন নামটা আছে কি না। বাংলার সমস্ত মানুষকে বলছি, নিজেরা নিজেদের স্বার্থে নিজেদের নাম তুলুন। একটু কষ্ট করে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কাজ সেরে আসুন। না হলে কাল বলে দেবে, আপনার নাগরিক অধিকার নেই।’’
ভোটার তালিকায় নামের বানান ভুল থাকলে তা-ও সংশোধন করে নিতে বলেছেন মমতা। না হলে অসমের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বাংলাতেও, আশঙ্কা তাঁর।
নেতাজি ইনডোরে এনআরসি প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে সব কিছু হারিয়ে কত মানুষ এখানে এসেছেন। ১৯৭১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত যাঁরা এসেছেন, তাঁদের নিয়ে তো সরকারের চুক্তি রয়েছে। তিনি ভারতবর্ষেরই নাগরিক। তবে কখনও কখনও ভাঁওতা দেওয়া হয়। বলে দেওয়া হয়, আপনি নাগরিক নন।’’
যাঁদের ভোটে সরকার নির্বাচিত হয়েছে, তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না, নেতাজি ইনডোর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে এমন মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার ভোটেই তুমি প্রধানমন্ত্রী হলে, এখন আমাকেই তুমি নাগরিক অধিকার দিতে চাইছ? এটা তো অসম্মান করা। যাঁরা এত দিন ধরে এখানে থাকছেন, স্কুল-কলেজে পড়ছেন, কেউ রিকশা চালাচ্ছেন, কেউ চাষ করছেন, তাঁরা সেই অধিকার কোথায় পাচ্ছেন? প্রত্যেকের আধার কার্ড, রেশন কার্ড রয়েছে। ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। তাঁদের নতুন করে নাগরিক অধিকার দেওয়া মানে তাঁদের অসম্মান করা।’’
রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র নতুন করে নাগরিকত্বের বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নিয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। তাই ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ও পরিবারের নাম সংশোধন করে আসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।