ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গেল। কিন্তু বাঁকুড়ায় বিজেপি-র জেলা সভাপতি পার্থসারথি কুণ্ডুকে এখনও মানতে পারছেন না দলের অনেক নেতা-কর্মীই। শুক্রবার সেই দ্বন্দ্বের ছবি ফের সামনে এল খাতড়ায় রানিবাঁধ বিধানসভা কেন্দ্রের কর্মী সম্মেলনে। সেই সম্মেলন বয়কট করলেন বিক্ষুব্ধরা। ফলে বিধানসভাভিত্তিক সম্মেলন এককথায় ছোটখাটো কর্মিসভায় পরিণত হল। বিধানসভা ভোটের আগে দলের বিক্ষুব্ধদের এই সম্মেলন বয়কটে অশনিসঙ্কেত দেখছেন বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব।
দলের রাজ্য সভাপতি বদল হওয়ার পরেই বাঁকুড়া-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় জেলা সভাপতি পরিবর্তন করা হয়। তা নিয়ে অসন্তোষ চলছেই। বাঁকুড়াতেও খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এসে তা ভাল ভাবে আঁচ পেয়েছেন। কিন্তু পার্থসারথিবাবুকেই জেলা সভাপতির পদে রাখা হয়েছে।
বিজেপি নেতৃত্ব ঘোষণা করেছিল, এ দিন সকাল ১০টায় এই সম্মেলন শুরু হবে। কিন্তু দুপুর ১২টা নাগাদ গিয়ে দেখা যায় সম্মেলন তখনও শুরু হয়নি। পার্থসারথিবাবু, দলের পাঁচ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল আসার পরে প্রায় আড়াইশো কর্মীকে নিয়ে শুরু হয় সম্মেলন। সেখানে সব দ্বন্দ্ব ভুলে দলের নিচুতলার কর্মীদের ভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন জেলা নেতারা। কিন্তু দলের জেলা নেতাদের মধ্যেই যে দ্বন্দ্ব রয়ে গিয়েছে তা এলাকার প্রথমসারির নেতাদের অনুপস্থিতিতেই প্রমাণিত। রানিবাঁধ, খাতড়া ও হিড়বাঁধ ব্লক নিয়ে গঠিত রানিবাঁধ বিধানসভা কেন্দ্র। অথচ ওই এলাকার বাসিন্দা জেলার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দাস, রানিবাঁধ ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি শ্যাম মাহাতো, হিড়বাঁধ ব্লকের উত্তম মণ্ডল, জেলা মহিলা নেত্রী আভারানি মল্লিক, জেলা কমিটির সদস্য শিশির মাহাতো, বিশ্বনাথ মাঝি, সমীরণ চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপি-র বহু নেতা কর্মীর অনুপস্থিতি কর্মীদের নজরে আসে।
কেন যাননি সম্মেলনে? বিজেপি নেতা অভিজিৎবাবু দাবি, “সম্মেলন হচ্ছে বলে শুনেছি। কিন্তু শরীর একটু খারাপ থাকায় যেতে পারিনি।” তবে অনুপস্থিত অনেক নেতাই সরাসরি অভি যোগ করেছেন, ‘‘সম্মেলন হচ্ছে বলে ‘নাম কা ওয়াস্তে’ আমাদের কয়েকজনকে মুখে জানানো হয়েছিল। অনেককে আবার সম্মেলনের ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। তাই ইচ্ছে থাকলেও অভিমানে অনেকেই এ দিনের সম্মেলনে যাইনি।’’
বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র বিবেকানন্দ পাত্র অবশ্য দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “এটা ইনডোর সভা। দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীদের সম্মেলনে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। দলের জেলা ও ব্লক স্তরের অধিকাংশ পদাধিকারী এ দিনের সম্মেলনে হাজির ছিলেন। হাতেগোনা কয়েকজন শুধু আসেননি। কেন তাঁরা এ দিনের সম্মেলনে এলেন না সেটা তাঁরাই বলতে পারবেন।” শ্যামাপদবাবুও দাবি করেছেন, “দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। আমরা গাড়ি দিতে পারিনি বলে দূরদূরান্তের কর্মীরা আসতে পারেননি। কোনও কারণে কেউ হয়তো এ দিনের সম্মেলনে সময় মত উপস্থিত হতে পারেননি। কেউ সম্মেলনকে বয়কট করেননি। এটা অপপ্রচার।”