Saumitra Khan

কর্মীদের ত্রিশূল দিলেন সাংসদ, বিতর্ক

বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সাংসদ-সহ ন’জন বিজেপি কর্মী মাথা মুণ্ডন করে যজ্ঞে বসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০১:৩৫
Share:

ষাঁড়েশ্বর মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র

মন্দিরে যজ্ঞ করে ন’জন কর্মীর হাতে ত্রিশূল তুলে দিলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের বাঁচাতে রাজ্যের যুব কর্মীদের হাতে নব্বই হাজার ত্রিশূল তুলে দেব। তারই প্রতীক হিসাবে এ দিন ন’জনকে ত্রিশূল দিয়েছি।’’ ঘটনায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। এ দিন পুজোর সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘যজ্ঞের নাম করে মানুষের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। কোনও ভাবে যাতে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখার আহ্বান জানাচ্ছি এলাকার বাসিন্দাদের।’’ ত্রিশূল দেওয়া প্রসঙ্গে এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। কর্তৃপক্ষকেও জানাব।’’

Advertisement

বিষ্ণুপুরের ডিহরের ষাঁড়েশ্বর শিবমন্দির সংরক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। চত্বরের একটি মন্দিরে পুজো হয়। অন্যটি সংস্কারের কাজ চলছে। সেখানে ভক্তদের ঢোকা বারণ। এ দিন ওই সংরক্ষিত মন্দির চত্বরেই যজ্ঞের আয়োজন হয়েছিল। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সাংসদ-সহ ন’জন বিজেপি কর্মী মাথা মুণ্ডন করে যজ্ঞে বসেন। যজ্ঞ শেষে সৌমিত্র বলেন, ‘‘জাতীয় পতাকা তুলতে গিয়ে খানাকুলে খুন হয়েছেন আমাদের কর্মী। এ বার নিজেদের বাঁচাতে ত্রিশূল রাখব। রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকার উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত এ ভাবে মাথা মুণ্ডনের মধ্য দিয়ে ত্যাগের প্রতিজ্ঞা করলাম।’’

সংরক্ষিত মন্দির চত্বরে যজ্ঞ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের বিষ্ণুপুরের সংক্ষণ আধিকারিক রোহিত কুমার বলেন, ‘‘ষাঁড়েশ্বর মন্দির সংস্কার হচ্ছে। নিয়মকানুন সবই পুরোহিতকে বলা আছে।’’ কিন্তু সেখানে কেউ নিয়ম ভাঙলে কী হবে? জবাব দেননি আধিকারিক। মন্দিরের পুরোহিতদের মধ্যে সাধন নায়ক বলেন, ‘‘মন্দিরে পুজো করে নীচে যজ্ঞ করেছেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। মন্দিরে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের রক্ষী রয়েছেন। তাঁকে আমরা জানিয়েছিলাম।’’

Advertisement

শ্রাবণের শেষ সোমবার ষাঁড়েশ্বর মন্দির চত্বরে পূন্যার্থীদের ভিড় ছিল। সাংসদের যজ্ঞেও শামিল হয়েছিলেন বিজেপির অনেক কর্মী-সমর্থক। ‘প্রত্যক্ষদর্শী’দের একাংশের দাবি, ত্রিশূল নেওয়ার সময়ে ঠেলাঠেলির পরিস্থিতি হয়েছিল। সাংসদ-সহ কারও মুখেই ‘মাস্ক’ ছিল না। দূরত্ববিধি যে মানা হয়নি, সৌমিত্র নিজেই সে কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সব ক্ষেত্রে নিয়ম মানা সম্ভব হয়নি। মানুষের সুস্থতা কামনায় আমরা বাবার মন্দিরে সমবেত হয়েছি। তিনি নিশ্চয় আমাদের মঙ্গল করবেন।” এসডিও (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement