দুধকুমার মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র kalyan.aligram@gmail.com
দলের নিচুতলার কর্মীদের অনুরোধে নিয়ম মেনে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর পরে দল প্রতীক চিহ্ন দিলে ভাল, না হলে নির্দল প্রার্থী হিসেবেই লড়বেন বলে হুঙ্কার দিলেন বিজেপির ‘বিতর্কিত’ নেতা দুধকুমার মণ্ডল। পাশাপাশি, তাঁর চালেঞ্জ, তাঁর আসনে দলের নেতারা বিজেপির প্রতীকে কাউকে দাঁড় করিয়ে দেখিয়ে দিক। রাখঢাক না করেই তিনি সরাসরি স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের দিকে ওই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে দুধকুমারের ওই মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে দল।
দুধকুমারকে নিয়ে দলের অস্বস্তি অবশ্য নতুন নয়। ময়ূরেশ্বর তথা জেলার রাজনীতিতে ‘ডাকাবুকো’ নেতা হিসেবে দুধকুমারের পরিচিতি দীর্ঘদিনের। তিনি একাধিক বার পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। জেলা পরিষদ, বিধানসভা এবং লোকসভাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। জেলা সভাপতি, রাজ্যকমিটির সদস্য-সহ দলের বিভিন্ন পদের দায়িত্ব সামলেছেন।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির ‘রোল মডেল’ হয়ে ওঠেন দুধকুমার। ওই নির্বাচনে শ’তিনেক ভোটের ব্যবধানে শাসকদলের প্রার্থীকে হারিয়ে রোল মডেল হয়ে ওঠেন তিনি। এর পরেও তিনি দলের একাংশের কাছে ‘ব্রাত্য’ হয়ে পড়েন বলে দলীয় সূত্রের খবর। ২০১৬ সালে রাজ্য কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। পরে অবশ্য রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতা এবং রামপুরহাট বিধানসভার টিকিট পাওয়ার পরে ফের সক্রিয় হন দুধকুমার। পরে কমিটি গড়া নিয়ে ফের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। এ বার তিনি বলেন, ‘‘এলাকার কিছু প্রান্তিক এবং মণ্ডল স্তরের কর্মী আমাকে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। তাঁদের কথা রাখতেই আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। এখন দল প্রতীক দিলে ভাল। না দিলে নির্দল হয়ে লড়াই করব। শ্যামাপদ মণ্ডলেরা আমার আসনে অন্য কাউকে বিজেপির টিকিটে দাঁড় করিয়ে দেখিয়ে দিক।’’
শ্যামাপদ বলেন, ‘‘দুধদা কেন আমার নাম নিয়েছেন জানি না। তাঁর সঙ্গে আমার কোনও বিরোধ নেই। রাজ্য কমিটির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি আছে। তাঁর দায় আমার নয়। প্রতীক দেওয়ার বিষয়টি মণ্ডল এবং জেলা কমিটি বলতে পারবে।’’ অন্য দিকে, বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজনৈতিক নেতা হিসেবে দুধকুমারদাকে শ্রদ্ধা করি। তাঁকে প্রতীক দেওয়ার বিষয়টি স্থানীয় কর্মী এবং কার্যকর্তাদের উপরে নির্ভর করছে। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’