লোকসভা নির্বাচনে দল ভাল ফল করেছে জেলায়। ভোট বেড়েছে বিপুল। তৃণমূলের সঙ্গে বেড়েছে সংঘাতও। এমনই পরিস্থিতিতে বদল হলেন বিজেপি-র বীরভূম জেলা সভাপতি। রামকৃষ্ণ রায়ের বদলে জেলা সভাপতি করা হল ময়ূরেশ্বরে ২ ব্লকের বীরনগরের বাসিন্দা শ্যামাপদ মণ্ডলকে। এই মুহূর্তে যিনি দলের রাজ্য সম্পাদক। রবিবার বিকেলে কলকাতায় রাজ্য নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত সামনে আসতেই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে জেলা সভাপতি বদলের কারণ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
বিজেপি-র এক রাজ্য নেতা জানাচ্ছেন বীরভূমকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতেই রাজ্য নেতাকে সভাপতি করা হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে বিজেপি-র জিততে না-পারা যদি এর একটি কারণ হয়, অন্য কারণ সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতির সঙ্গে দলের বিরোধী গোষ্ঠীর চাপা দ্বন্দ্ব রুখে দলের সংগঠনকে মজবুত করা। যাঁকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হল, সেই শ্যামাপদবাবু দলের বহু দিনের কর্মী এবং দক্ষ সংগঠক হিসাবে পরিচিত। দল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুকাল আগে আরএসএসের মাধ্যমে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকে ময়ূরেশ্বর তথা বীরভূমে সংগঠন বাড়ানোর কাজে দুধকুমার মণ্ডলের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল শ্যামাপদবাবুর। বছর তিনেক আগে দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরেই তাঁকে রাজ্য সম্পাদক করা হয়। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সংগঠন মজবুত করার কাজ পেয়েছিলেন এই নেতা। তাঁকেই ফের জেলায় ফিরিয়ে এনে বীরভূমে সংগঠন মজবুত করার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল।
বিজেপি সূত্রে খবর, সাড়ে তিন বছর আগে আহ্বায়ক অর্জুন সাহাকে সরিয়ে রামকৃষ্ণ রায়কে জেলা সভাপতি করার পরে জেলায় দলের সংগঠন বাড়লেও গোষ্ঠী কোন্দল বড় সমস্যা হয়ে উঠেছিল। লোকসভা নির্বাচনের সময় সেই কোন্দল কিছুটা চাপা দেওয়া সম্ভব হলেও ভোটের ফল বের হতেই সেটা ফের প্রকাশ্যে আসে। প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা এ বার বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থী দুধকুমারের অনুগামীদের মত, সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতির সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ না হওয়াটাও নির্বাচনে দলের ফলে প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়াও রামকৃষ্ণবাবু ও জেলার সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডলকে নিয়ে দলের
অন্দরেই নানা অভিযোগ উঠেছিল। দুই শিবিরের মধ্যে ভারসাম্য করতেই এমন এক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হল বলে মনে করছেন বিজেপি-র নিচুতলার নেতা-কর্মীরা।
রামকৃষ্ণবাবু নিজে অবশ্য বলছেন, ‘‘সাধ্যমতো ভাল ভাবে দল পরিচালনার চেষ্টা করেছি। জেলা সভাপতি হিসেবে আমার তিন বছরের মেয়াদ ফুরিয়েছিল গত ডিসেম্বরেই। দল যা ভাল মনে
করেছে, সেটাই করেছে।’’ নতুন সভাপতির সঙ্গে এ দিন অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এসএমএসেরও জবাব মেলেনি।