(বাঁ দিকে) রামের পুজোয় শঙ্খধ্বনি। (ডান দিকে) বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা। বুধবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজো উপলক্ষে জেলার নানা জায়গায় রামের পুজো হল। রাজ্যব্যাপী পূর্ণ লকডাউন চললেও তার মধ্যেই বুধবার এই পুজো আয়োজনের পুরোভাগে দেখা গিয়েছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। লকডাউন অমান্য করে রামপুজোর আয়োজনে পুলিশের সঙ্গে বিবাদও বাধে বিজেপির।
এ দিন জেলা সদর সিউড়িতে বিজেপির কার্যালয়ে রামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন জেলা বিজেপির কার্যকর্তারা। সেই সময় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন জনা পঞ্চাশ বিজেপি কর্মী-সমর্থক। বিজেপির অভিযোগ, এ দিন সকালে বিজেপির কার্যকর্তারা ওই কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য যখন কার্যালয়ে আসছিলেন তখন পুলিশ তাঁদের পথ আটকায়। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কার্যকর্তাদের অল্পবিস্তর বচসাও হয়। পরে অবশ্য তাঁরা পুলিশের বাধা পেরিয়ে কর্মসূচিতে যোগদান করেন।
বিজেপির অভিযোগ, কর্মসূচিতে যোগদান করতে আসার পথে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক উত্তম রজককে আটক করে পুলিশ। ওই কর্মসূচি শেষ করে থানায় হাজির হন দলের জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল-সহ কয়েকজন নেতা। তাঁরা গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথাও বলেন। এ দিন দুপুর পর্যন্ত উত্তম রজককে ছাড়া হয়নি বলে বিজেপি দলীয় সূত্রে খবর। শ্যামাপদ বলেন, ‘‘আমি পুলিশকে আগেই বলে ছিলাম যে আমরা কোনও মিছিল করব না। তবে কার্যালয়ের ভিতরে প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় রেখে রামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করব।’’ এ দিন সিউড়ি শহরেরও বেশ কিছু জায়গাতেও রামের পুজো হয়।
রামপুরহাট পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও রামের পুজো হয়েছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে রামের মূর্তি বানিয়ে পুজো করা হয়। ৫ এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবকেরা মহাজনপট্টি মোড়ে রামের বিরাট আকার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে পুজো করেন। পুজোর সঙ্গে হোমযজ্ঞও, প্রসাদ বিতরণও হয়। অনেক জায়গায় বাজিও ফাটানো হয়। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জটাধারী মন্দিরে রামের পুজো করেন বিজেপির জেলা সহ সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী। উদ্যোক্তাদের সকলেরই দাবি, পারস্পরিক দূরত্ব বিধি মেনেই পুজো করা হয়েছে।
বোলপুরে এ দিন স্টেশনে ঢোকার মুখে হাটতলায় ঘটা করে রামের ছবি লাগিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। তবে রাজ্য জুড়ে লকডাউন চলায় শেষ মুহূর্তে পুলিশের অনুমতি না মেলায় এ দিন হাটতলার হনুমান মন্দিরেই সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে পুজো আরতি করা হয়। পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য ভরত তিওয়ারি বলেন, ‘‘যেহেতু লকডাউন চলছে তাই বাইরে জমায়েত করে পুজো করা যায়নি। মন্দির চত্বরেই দূরত্ব বিধি মেনে কম সংখ্যক লোক নিয়ে আমরা পুজো করেছি।’’ বোলপুর থেকে শান্তিনিকেতন যাওয়ার রাস্তায় ভুবনডাঙ্গা এলাকাতেও এ দিন হনুমান মন্দিরে বিশেষ পুজো পাঠের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু পুজো শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সাধারণ মানুষ সেখানে ভিড় জমাতে থাকলে পুলিশের পক্ষ থেকে সেই জমায়েত সরিয়ে দেওয়া হয়। বোলপুরের ডাঙ্গালি কালীতলাতেও পুজো ও যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে বিজেপির একাধিক জেলা ও শহর নেতৃত্বকে। রামের পুজোকে কেন্দ্র করে শহরের কোথাও বড় ধরনের জমায়েত হচ্ছে কি না তা দেখতে এ দিন পাড়ায় পাড়ায় পুলিশকর্মীদের নজরদারি চালাতেও দেখা যায়।