ডালে-ডালে: পুরুলিয়ার সেই গাছে মৌমাছির চাক। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়কের ধারে বাজার। আর সেই বাজারের মধ্যে প্রাচীন অশ্বত্থ গাছের ডালে ঝুলছে বেশ কয়েকটি মৌমাছির চাক। সেই চাক সরাতেই পথে বসে পড়লেন বিজেপি কর্মীরা। এর জেরে রবিবার পুরুলিয়া শহরের নডিহা এলাকায় ঘণ্টাখানেক আটকে গেল পুরুলিয়া-জামশেদপুর জাতীয় সড়ক। মৌমাছির হুলের যন্ত্রণার ভয়ে ডাকা অবরোধে পথে আটকে বিস্তর যন্ত্রণা ভোগ করতে হল যাত্রীদের।
বিজেপি কর্মীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, ওই মৌমাছি এলাকায় ‘লেলহে মাছি’ নামেই পরিচিত। আর যাঁদের এই মৌমাছি হুল ফুঁটিয়েছে, তাঁরাই জানেন, কী ভয়ানক। চাক থেকে উড়ে কয়েকটি মৌমাছি যদি কাউকে তাড়া করে, তাহলে তাঁর আর রক্ষা নেই। ছুটে পালিয়ে গিয়েও নিস্তার পাওয়া যাবে না।
জাতীয় সড়কের ধারে ওই গাছের ছায়াতেই বাজার বসে। মাথার উপরে মৌমাছির চাক দেখতে দেখতে আতঙ্ক জড়ানো গলায় মাছ বিক্রেতা যমুনা কৈবর্ত বলেন, ‘‘ওই মাছি হুল ফোটালে আর দেখতে হবে না। ভয়ে বেচাকেনা মাথায় ওঠার জোগাড়।’’ ব্যবসায়ী সুকুমার দে থেকে হেমন্ত সেন সবারই মুখে মুখে ঘুরছে আতঙ্কের কথা।
এই আতঙ্ক সরাতেই বসে বসে পড়েন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে শহরের বিজেপি নেতা নগেন্দ্র ওঝা বলেন, ‘‘ওই লেলহে মাছির চাক অনেকদিন ধরেই রয়েছে। অনেককে হুলও ফুঁটিয়েছে। তবু পুরসভার কোনও হেলদোল নেই। তাই বাধ্য হয়েই এ দিন অবরোধ করা হয়েছে।’’
এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মৌমাছির চাকের জন্য এলাকায় অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু শেষে মৌমাছির চাক সরাতেও বিজেপিকে পথ অবরোধে নামতে হচ্ছে! দলটার এত অধঃপতন হয়েছে। এইরকম দাবি নিয়ে কেউ কোনওদিন জাতীয় সড়ক অবরোধ করে মানুষকে সমস্যায় ফেলেছে বলে শুনিনি। যে শুনছে, সেই হাসছে।’’ নগেন্দ্রবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘এতদিন পুরসভাও তো বাজার এলাকার মানুষের এই সমস্যায় নজর দেয়নি।’’ পুরুলিয়ার উপপুরপ্রধান বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘ঘটনাটি তো পুরসভায় কেউ এতদিন জানাইনি। জানালে নিশ্চয় পুরসভা কিছু করত।’’