—প্রতীকী চিত্র।
গত বারের ধারা এ বারও বজায় রইল। মাধ্যমিকের থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করল জেলা। বুধবার প্রকাশিত ফলে দেখা গেল এ বার জেলার পাশের হার ৯০.২১ শতাংশ। যা রাজ্যের প্রথম দশটি জেলার মধ্যে পড়ে। পাশাপাশি, মেধা তালিকায় প্রথম দশে থাকা ৫৮ জনের মধ্যে জেলা থেকে দু’জন আছেন।
ফল ঘোষণায় পরেই জেলার পরীক্ষার্থীদের সাফল্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। জেলার পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই পরীক্ষাই ভবিষ্যৎ জীবনের অন্যতম চাবিকাঠি। জেলার পরীক্ষার্থীরা অত্যন্ত ভাল ফল করেছেন।’’
উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যের ধারা বজায় রেখে জেলায়ও এ বারও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি ছিল। জেলায় এ বার নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৬০৯ জন। পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২৮ হাজার ৩৬ জন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ২৩০ জন। ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৮০৬ জন। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, পাশ করেছেন ২৫ হাজার ২৯২ জন। উত্তীর্ণ ছাত্রের সংখ্যা ১১ হাজার ৪৪৪ জন ও ছাত্রীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৪৮ জন।
এ বার মাধ্যমিকে সাফল্যের হার ছিল ৭৮.২ শতাংশ। গত বারে উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্যের হার ছিল ৮৯.২৫ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে দু’টি পরিসংখ্যানকে পিছনে ফেলে দিয়েছে জেলা। মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন শান্তিনিকেতন নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী বোলপুরের বাসিন্দা সানন্দা রায়। আর ষষ্ঠ স্থানে আছেন রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের ছাত্র রামপুরহাটের সৌম্যজিৎ নন্দী। জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, এমন অনেক ছাত্র-ছাত্রীই আছেন, যাঁরা সামান্য কয়েকটি নম্বরের জন্য মেধা তালিকায় জায়গা পাননি।
এই সাফল্যের পিছনে ছাত্র-ছাত্রীদের আবার ক্লাসে ফিরে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারা। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০-২১ সালে করোনার জন্য স্কুল বন্ধ ছিল। অনলাইনে পড়াশোনা সে ভাবে সফল হয়নি। ক্লাসে ফিরে পড়ুয়ারা অনেক আন্তরিক হয়েছেন। দ্বিতীয়ত, শিক্ষক, শিক্ষিকাদের একাংশের মতে, মাধ্যমিকে সব বিষয় পড়তে হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে পছন্দের বিষয় বাছতে পারেন পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, এখন অনেক স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের কলা বিভাগে ইতিহাস, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ভূগোল, অর্থনীতি, সংস্কৃতের মতো পরিচিত বিষয়ের বাইরে এডুকেশন, কম্পিউটার সায়েন্স, এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ়, নিউট্রিশন ও সমাজবিজ্ঞানের মতো বিষয় নেওয়া যাচ্ছে। এতে অনেক পড়ুয়ারা সুবিধা হয়েছে।
শিক্ষক, শিক্ষিকাদের একাংশের মতে, এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে প্রশ্নপত্রের ধরনও। একটু মন দিয়ে পড়াশোনা করলে উত্তর দেওয়া সহজ হয়েছে। তবে, শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, ফল আরও ভাল হতে পারত। সেখানে বাধা সৃষ্টি করেছে ‘উৎসশ্রী’ প্রকল্পে গ্রামাঞ্চল থেকে বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষক বদলি হয়ে যাওয়া। যাতে, শিক্ষকের অভাবে নানা স্কুলে পড়াশোনায় সমস্যা হয়েছে।