অভিনব: সোনাঝুরির হাটে এমন বাসেই মিলবে নানা পরিষেবা। নিজস্ব চিত্র
আস্ত একটি বাসের মধ্যেই নানা সুযোগ-সুবিধা পাবেন পর্যটকেরা। শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। শান্তিনিকেতনের অন্যতম জনপ্রিয় খোয়াইয়ের হাট ঘুরতে আসা পর্যটকদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে এই এমনই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূমে আসার কথা। তখন তাঁর হাত দিয়েই উদ্বোধন হওয়ার কথা সমস্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত বাসটির।
খোয়াইয়ের হাট দেখতে বছরভর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান শান্তিনিকেতনে। কিন্তু, এই হাটে পানীয় জলের সুব্যবস্থা ও শৌচাগার না থাকায় হামেশাই পর্যটকেরা সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেন বোলপুরের বাসিন্দা তথা একটি বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার দীপ্তেন্দু রায়। বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে এবং জাতীয় সড়কে সফরকালীন শৌচাগার নিয়ে মহিলাদের যে-সব সমস্যার মুখে পড়তে হয়, তা নিয়ে দীপ্তেন্দুর সংস্থা কাজ করে চলেছে। ওই সংস্থা সোনাঝুরি হাটেও সমীক্ষা চালায়। সেই সমীক্ষাতেও শৌচালয় এবং পানীয় জলের সমস্যার কথা উঠে আসে। এর পরেই জেলা প্রশাসনের কাছে ওই সংস্থার তরফে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে পুরনো একটি বাসকে রূপান্তরিত করে জল, শৌচাগার-সহ নানা সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে জেলা প্রশাসন ওই সংস্থাকে এটি রূপায়ণের ভার দেয়।
দীপ্তেন্দু জানান, কলকাতার পুরনো একটি বাসের ভিতরের গঠন পরিবর্তন করে টানা দু'মাসের প্রচেষ্টায় পর্যটকদের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়। বাসটির ভিতরে আধুনিক শৌচাগার থেকে শুরু করে, শিশুকে স্তন্যপানের কক্ষ, একটি রেস্তোরাঁ, পোশাক পরিবর্তনের কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারের উপযোগী শৌচালয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। জানা গিয়েছে, জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর ও মিশন নির্মল বাংলার যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই ভ্রাম্যমাণ বাসটি তৈরি করা হয়েছে।
দীপ্তেন্দুর দাবি, “পশ্চিমবঙ্গে এমন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত বাসের ব্যবস্থা প্রথম। এটিকে মডেল হিসেবেও গণ্য করা যেতে পারে। একই সঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও এর থেকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে। এই পরিষেবা পর্যটকদের খুবই কাজে লাগবে।’’ জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “পর্যটকদের সমস্যার কথা চিন্তা করে এবং পরিবেশ দূষণ আটকাতে এই ধরনের প্রকল্প বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই ভ্রম্যমাণ বাসটি ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত। এখন কেবলমাত্র উদ্বোধনের অপেক্ষা।’’ তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম সফরে এলেই আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বাসের উদ্বোধন করা হবে। এর পরে বাসটিকে সোনাঝুরি হাটে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে পর্যটকদের পাশাপাশি বহু মানুষ উপকৃত হবেন।