খয়রাশোলে ৯বারের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী ভূপেন্দ্রনাথ ঘোষ।
এর আগে তিনটি রাজনৈতিক দলের টিকিটে একটিই গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে আট বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাত-সাত বার জয় পেয়েছেন। চলতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের খয়রাশোলের লাউবেড়িয়া গ্রামের ওই একই আসন থেকে তৃণমূলের প্রার্থী, বিদায়ী উপপ্রধান ভূপেন্দ্রনাথ ঘোষ । টানা ৯ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা অভিজ্ঞ ওই প্রার্থীকে নিয়ে এলাকায় বেশ চর্চা রয়েছে।
খয়রাশোলের গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯টি আসন। তার মধ্যে লাউবেড়িয়া গ্রামে দু’টি সংসদ রয়েছে। তারই একটিতে প্রার্থী বছর ছেষট্টির ভূপেন্দ্রনাথ। ওই বুথে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৭০০। তাঁর বিপক্ষে আছেন বিজেপি প্রার্থী তথা ওই গ্রামেরই বাসিন্দা অসীম পাল। ভূপেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে রয়েছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ (গোঁজ) প্রার্থীও। এ ছাড়া, আছেন এক নির্দল শিক্ষক প্রার্থী। এলাকা সূত্রে অবষশ্য জানা যাচ্ছে, হোঁজ বা নির্দল প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে তেমন সক্রিয় নন।
ফলে, ভূপেন্দ্রনাথের লড়াই মূলত বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে। দু’পক্ষের ভোট প্রচার চলছে সমানে। তবে, অষ্টম বার জয়ের ব্যাপারে এক প্রকার নিশ্চিত তৃণমূলের প্রার্থী। যে সংসদে ভূপেন্দ্রনাথ প্রার্থী হয়েছেন, সেখানে গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে শাসকদলের। তার পরেও এতটা প্রত্যয় কী ভাবে? তৃণমূলের দাবি, লোকসভা ও বিধানসভার সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের ফারাক আছে। তৃণমূলের প্রার্থীর এলাকায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। তা ছাড়া, সারা বছর মানুষের সঙ্গে জুড়ে থাকেন। ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতাও বিপুল। ভূপেন্দ্রনাথ নিজেও বলছেন, ‘‘চরিত্রগত দিক থেকে ওই নির্বাচনগুলির সঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কোনও মিল নেই।’’
তরুণ বয়স থেকে বাম রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া ভূপেন্দ্রনাথ ফরওয়ার্ড ব্লকের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার গ্রামের ওই সংসদ থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হন তিনি। এর পরেও ’৮৮, ’৯৩ ও ’৯৮ সালে ফব-র প্রার্থী হন তিনি। শেষবার হেরে যান। পরে ২০০৩ সালে সিপিএমের টিকিটে ভোটে লড়ে ফের জয়ী হন। সিপিএমের প্রার্থী হয়ে জয় পেয়েছিলেন ২০০৮ এবং ’১৩সালেও। এর পরে তিনি যোগ দেন শাসকদলে। ২০১৮ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেন তিনি। এ বার ফের শাসকদলের প্রার্থী। দুবার ফব-র প্রধান , একবার তৃণমূলের প্রধান এবং শেষ বার উপপ্রধান পদে ছিলেন।
বিজেপি প্রার্থী মানছেন, প্রতিপক্ষ শক্ত। তাঁর কথায়, ‘‘এই অভিজ্ঞতা তো সকলের থাকে না। তবে, আমিও লড়াই দেব।” এলাকার ভোটার সনৎ দে, দিলীপ কুমার দত্ত, যুথিকা ভান্ডারী, টিঙ্কু ভান্ডারীদের বক্তব্য, প্রয়োজন হলেই ভূপেন্দ্রনাথ ঘোষকে পাওয়া যায়। কাজের জন্য কার্যত পঞ্চায়েত পর্যন্ত যেতেই হয় না। প্রার্থীর কথায়, ‘‘এলাকার ভোটারেরা সচেতন। তাই আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’’