প্রতীকী ছবি।
ব্যালট-কাণ্ডে চাপানউতোর চলছেই। রবিবার বিকেলে পুঞ্চা এলাকায় জেলা পরিষদের ২৫ নম্বর আসনে জয়ী তৃণমূলের প্রার্থী সুজয় বন্দোপাধ্যায়ের নামে একটি খোলা চিঠি বিলি হয়েছে। সুজয়ের অভিযোগ, সিপিএমের প্রার্থী নির্বাচনে জিততে না পেরে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চক্রান্ত করেছেন।
শনিবার সকালে পুঞ্চার গণনাকেন্দ্রের বাইরে বেশ কিছু ছাপ দেওয়া ব্যালট উদ্ধার হয়। ২৫ নম্বর আসনে সিপিএমের প্রার্থী বিপত্তারণ শেখরবাবু থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, উদ্ধার হওয়া ব্যালটের অধিকাংশে সিপিএমের ভোট ছিল। বিপত্তারণ এবং কংগ্রেসের পুঞ্চা ব্লক সভাপতি বারিদবরণ মাহাতোর অভিযোগ, স্ট্রং রুম খুলে ব্যালট বাক্স পাল্টে ফেলা হয়। রাতের অন্ধকারে ব্যালট সরাতে গিয়ে গণনাকেন্দ্র চত্বরে কিছুটা ছড়িয়ে পড়ে। ব্লক প্রশাসনের দুই কর্মী ওই সমস্ত ব্যালট পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁরা হাতেনাতে ধরে ফেলেন বলে দাবি করেছিলেন বিপত্তারণ।
যদিও ব্লক প্রশাসন ব্যালট পোড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। বিডিও (পুঞ্চা) অজয় সেনগুপ্ত দাবি করেছিলেন, কী ঘটেছে দেখতে ব্লকের দুই কর্মীকে গণনাকেন্দ্র চত্বরে তাঁদের হেনস্থা করা হয়। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়ও গণনাকেন্দ্রে কারচুপি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, ওই ব্যালটগুলির ভোট গণনায় ধরা হয়েছে। অনৈতিক কিছু ঘটেনি।
ঘটনার পরেই তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী সুজয় সিপিএম এবং কংগ্রেসের চক্রান্তের কথা বলেছিলেন। রবিবার বিলি করা লিফলেটে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সকালে ব্লক অফিসের দুই কর্মী গণনাকেন্দ্র থেকে জিনিসপত্র আনতে গিয়ে দেখেন ইডি ব্যালটের বাক্সটি বিপত্তারণরা ইডি বাক্স ভেঙে ব্যালট বের করে রাস্তায় ছড়াচ্ছেন। সাত সকালে দূর থেকে সিপিএম এবং কংগ্রেসের কাছে প্রথম খবরটা গেল কী করে এবং ঘটনার ক্রম নিয়ে এই ধরণের আরও কিছু প্রশ্ন তুলে উপযুক্ত তদন্ত দাবি করা হয়েছে।
সোমবার সুজয় বলেন, ‘‘চারদিকে ব্যালট ছড়িয়ে আমার বদনাম ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন। ওঁদের ভূমিকা সন্দেহের উর্ধ্বে নয়।’’ পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে সুজয়ের। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ বেছে বেছে সিপিএম প্রার্থীর ছাপ দেওয়া ব্যালটগুলি বাজেয়াপ্ত করল। তৃণমূল আর বিজেপির ছাপ দেওয়া ব্যালট বাজেয়াপ্ত করল না কেন?’’ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ দাবি করেছে, চোখে পড়া সমস্ত ব্যালট ওই দিন উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্য দিকে, বিপত্তারণ এবং বারিদবরণের নামে প্রকাশিত লিফলেটে শাসকদলের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ করা হয়েছে বিডিও-র বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, ছড়িয়ে থাকা ব্যালটগুলি ভোটকর্মীদের (ইডি) ছিল না। বিপত্তারণ বলেন, ‘‘সুজয়বাবু নিজের অপকর্ম ঢাকতে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। ব্যালটের পিছনে বুথ নম্বর এবং প্রিসাইডিং অফিসারের সই রয়েছে।’’
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে বি়ডিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ওই দিন ব্লক অফিসের দুই কর্মী বিপত্তারণদের ব্যালট ছড়াতে দেখেছেন কি না সেই প্রশ্নেও কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।