অবস্থান: এনআরসি-বিরোধী ধর্না বোলপুর চৌরাস্তায়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
এনআরসি আতঙ্কে ভিক্ষুকদের ঘেরাও করলেন গ্রামবাসী। রবিবার ঘটনাটি ঘটে ইলামবাজার থানার অন্তর্গত ছোটচক গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্র থেকে প্রায় ২০ জন ইলামবাজারের ছোটচক গ্রামে ভিক্ষা করতে এসেছিলেন। ওই ভিক্ষুকদের মধ্যে ছিলেন কিছু মহিলাও। এ দিন বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করার সময় কোন গ্রামে কে কত টাকা দিচ্ছেন সেটি ওই ভিক্ষুকরা একটি খাতায় লিখে রাখছিলেন। গ্রাম সূত্রে খবর, ওই লেখা দেখেই গ্রামেরই অনেকে ভাবেন এনআরসি ও সিএএ সমর্থনে হয়তো ওই ভিক্ষুকেরা গ্রামবাসীদের প্রভাবিত করছেন। তার পরেই গ্রামবাসীদের কাছে ভিক্ষুকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিক্ষোভে সামিল হয়ে ছিলেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইলামবাজার থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ভিক্ষুকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
বীরভূমে এর আগে এনআরসি-আতঙ্কে একের পর এক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে সরকারি সমীক্ষার তথ্য নিতে যাওয়া কর্মীদের ঘিরে। ‘ইন্টারনেট দিদি’দের ঘিরে বিক্ষোভ হয়েছে। পুড়েছে বাড়িও। কার্যত বাধ্য হলে সমীক্ষার কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। তারপর বিক্ষোভের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক যে কমেনি এ দিনের ঘটনাই তার প্রমাণ বলে স্থানীয়দের দাবি।
তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘ছোটচক গ্রামে অবাঙালি কয়েক জন ভিক্ষার নাম করে এসে গ্রামবাসীদের কাগজে সই করাছিলেন। সন্দেহ হওয়ায় গ্রামবাসীরা তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। এর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভিক্ষুকের দলটি মহারাষ্ট্র থেকে এসেছিল। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এনআরসি বিরোধিতায় এ দিন সারাবাংলা এনআরসি বিরোধী নাগরিক কমিটির বোলপুর শাখার তরফ থেকে বোলপুর চৌরাস্তায় একটি ধর্না-অবস্থানেরও আয়োজন করা হয়েছিল।
উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক বিজয়কৃষ্ণ দোলুই, হেতমপুর কলেজের শিক্ষিকা রিনি লাবার, বাঁকুড়ার বড়জোড়া কলেজের শিক্ষক মিঠুন সিংহ, বোলপুর কলেজের শিক্ষক অমিত মণ্ডল প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন ছাত্রছাত্রীরাও। এ দিনের ধর্না-অবস্থান থেকে এনআরসি ও সিএএ-র বিরুদ্ধে তীব্র ভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে ধর্না-অবস্থান।