বাঁকুড়া থেকে মসাগ্রাম হয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন সোজা পৌঁছে যাবে হাওড়া স্টেশনে। — ফাইল ছবি।
প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে বাঁকুড়া থেকে মসাগ্রাম হয়ে যাত্রিবাহী ট্রেন সোজা পৌঁছবে হাওড়া স্টেশনে। মাঝে আর ট্রেন পাল্টাতে হবে না যাত্রীদের। মসাগ্রাম স্টেশনে মিশে যাবে পূর্ব রেল এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেল। তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন। বিজেপি যদিও তা মানতে নারাজ।
এই খবরে খুশি বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমান জেলার দক্ষিণ দামোদর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা চাইছেন, যত দ্রুত সম্ভব রেল এই পরিষেবা চালু করুক। তা হলে শুধু সাধারণ মানুষ জনই নয়, দুই জেলার কৃষকেরাও উপকৃত হবেন।
অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা এই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হন। তার পরেই ন্যারো গেজের এই রেল পথটিকে ব্রডগেজে রূপান্তরের কাজ শুরু করে পূর্ব রেল। ২০০০ সাল থেকে শুরু হয় সেই কাজ। বাঁকুড়া থেকে হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার মসাগ্রাম পর্যন্ত রেলপথ গড়া হয়। মসাগ্রাম হয় জংশন স্টেশন। নতুন করে গড়ে তোলা এই রেল পথের উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালে । এর পর শুরু হয় বাঁকুড়া থেকে মসাগ্রাম পর্যন্ত ১১৮ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেল পথের বৈদ্যুতিকরণের কাজ । ২০২১ সালের প্রথম দিকে সেই কাজ শেষ হয়। এ বার এই রেল পথ দিয়েই যাত্রিবাহী ট্রেন বাঁকুড়া থেকে মসাগ্রাম হয়ে হাওড়া যাবে।
সূত্রের খবর, পূর্ব রেল পুরো কাজটি করবে। সে জন্য ৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রেল। ১০ মাসে শেষ করতে হবে কাজ। বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল বলেন, “বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের রেলমন্ত্রী থাকা কালে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন। বাঁকুড়া থেকে হাওড়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেলে চাষের সব্জি নিয়ে চাষিরা হাওড়া ও কলকাতার বাজারে বিক্রি করতে যেতে পারবেন। এমনটা করতে পারলে বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমার চাষিদের রোজগারও বাড়বে।’’
জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গোটা দেশের মানুষের বিকাশের কথা ভাবে। তাই বাংলার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতির কথা ভেবে কেন্দ্রের রেল দফতরও বাঁকুড়া ও বর্ধমান দুই জেলার মানুষের দাবিকেই মান্যতা দিয়েছে। এখন যেমন বাংলার রেলপথ দিয়ে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন ছুটছে, তেমনই আর কয়েক মাস পর জঙ্গলমহল বলে পরিচিত মানুষজন এক ট্রেনে চেপেই বাঁকুড়া থেকে সোজা হাওড়া পৌঁছে যাবেন।’’
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘বুধবার এ বিষয়ে বিভাগীয় রেল ম্যানেজার সবিস্তারে জানাবেন।’’