বিষ্ণুপুর পুরসভায়। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাঁকুড়া সফর চলাকালীন রদবদল ঘটল বিষ্ণুপুর পুর-প্রশাসকের পদে। সোমবার শ্যাম মুখোপাধ্যায়ের জায়গায় পুর-প্রশাসক পদে দায়িত্ব নিলেন দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, “চেয়ার বা পদ কারও সম্পত্তি নয়। সকলকেই এক দিন তা ছেড়ে যেতে হয়। আমাকেও যেতে হবে। তার আগে কাজ করে যাব।” কয়েকশো মহিলা শঙ্খধ্বনি দিয়ে, ফুল ছড়িয়ে এ দিন তাঁকে স্বাগত জানান।
এ দিন বিষ্ণুপুর পুরনির্বাহী আধিকারিক গোবিন্দ ভট্টাচার্য দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন নবনিযুক্ত পুর-প্রশাসক দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরবোর্ডের তিন সদস্য তন্ময় ঘোষ, গৌতম গোস্বামী ও সুশোভন নন্দীকে। নবনিযুক্ত পুর-বোর্ডের প্রশাসক ও সদস্যদের সংবর্ধনা জানান বিষ্ণুপুর তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুশান্ত মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মথুর কাউড়ি, বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য, জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যালের পক্ষে সজল চক্রবর্তী ও অন্যরা। পুরসভা চত্বরে দেখা যায়নি শ্যাম মুখোপাধ্যায় ও বিদায়ী উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়কে। তবে শ্যামবাবুর অনুগামীদের অনেকে হাজির ছিলেন ।
পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের শহর বিষ্ণুপুরকে সাজিয়ে তুলতে সময় লাগবে। প্রথমেই ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরিতে উদ্যোগ হবে। সাজিয়ে তোলা হবে রামশরণ মিউজিক কলেজকে। পুরসভার সাফাইকর্মী ও অন্য অস্থায়ী কর্মীদের প্রতি মাসে মাইনে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”
বিষ্ণুপুর পুরনির্বাহী আধিকারিক গোবিন্দবাবু বলেন, “রবিবার শ্যামবাবু আমার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। সেটি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।” যদিও প্রশাসনিক ভাবে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরে তিনি পদত্যাগ করতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি, নতুন পুর-প্রশাসকের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তুতি শুরুর আগেই তড়িঘড়ি ছুটির দিনে বিদায়ী পুরপ্রশাসক কেন পদত্যাগ করতে গেলেন, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও শ্যামবাবুর বক্তব্য, ‘‘সরকারি নির্দেশমতো আমি নতুন পুর-প্রশাসককে দায়িত্ব বুঝে নিতে বারবার বলেছি। তবে তাঁর সময় না হওয়ায় বাধ্য হয়ে পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসারকে পদত্যাগপত্র দিয়েছি।’’
বিষ্ণুপুর পুরসভার নতুন বোর্ড নিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি হরকালী প্রতিহার বলেন, “তৃণমূল যাকেই পুর-প্রশাসকের দায়িত্ব দিক, মানুষ বিজেপিকেই চাইছে। রাস্তাঘাট, নিকাশি ব্যবস্থা, ‘হাউস ফর অল’ কোনওটাই বিষ্ণুপুরে ঠিকঠাক হয়নি।”