অভিযুক্ত বিল্টু কর্মকার। —নিজস্ব চিত্র।
রেলে চাকরির বিনিময়ে এক ব্যক্তিকে ১ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। হাতে এসেছিল ওই চাকরির নিয়োগপত্র-সহ পূর্ব রেলের পরিচয়পত্রও। তবে চাকরিতে যোগদানের সময় জানা গেল, সে সবই ভুয়ো। প্রতারিত হয়ে ওই ব্যক্তিকেই টাকার ফাঁদে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন বাঁকুড়ার এক যুবক। রবিবার অভিযুক্ত-সহ তিন জনকে আটক করেছে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওন্দার দুবড়াকোনের বাসিন্দা অনন্তকিশোর চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁকুড়া শহরের ফাঁসিডাঙা এলাকার বাসিন্দা বিল্টু কর্মকারকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে জেরার পর আরও দু’জনকে আটক করা হয়।
অনন্তকিশোরের দাবি, ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পূর্ব রেলের গ্রুপ ‘ডি’ পদে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিল্টু। মাস ছয়েক ধরে কিস্তিতে বিল্টুকে টাকা দেন তিনি। সপ্তাহখানেক আগে ওই চাকরির নিয়োগপত্র এবং পূর্ব রেলের পরিচয়পত্র হাতে পান অনন্তকিশোর। তবে নিয়োগপত্রে রেলের ওন্দা ডিভিশনে যোগদানের কথা লেখা থাকায় তাঁর সন্দেহ হয়। রবিবার চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে জানতে পারেন, গোটা বিষয়টিই ভুয়ো। পূর্ব রেলে ওন্দা ডিভিশন বলে কোনও বিভাগ নেই। অনন্তকিশোরের কথায়, ‘‘রেলের লোগো দেওয়া চাকরির নিয়োগপত্রে ওন্দা ডিভিশনে কাজে যোগদানের কথা লেখা ছিল। তবে ওন্দায় রেল স্টেশন থাকলেও ওই নামে কোনও ডিভিশন নেই। ফলে সন্দেহ হয়। রবিবার ওন্দা স্টেশনে গিয়ে কাজে যোগ দিতে গিয়ে জেনেছি, গোটাটাই ভুয়ো।’’
পূর্ব রেলে চাকরির এই নিয়োগপত্র এবং পরিচয়পত্র পেয়েছিলেন ওন্দার বাসিন্দা অনন্তকিশোর চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
এর পরই বিল্টুকে হাতেনাতে ধরতে ফাঁদ পাতেন অনন্তকিশোর। আরও টাকা দেওয়ার টোপ ফেলে রবিবার সকালে বিল্টুকে বাঁকুড়ার লালবাজারে ডেকে পাঠান। টাকা নিতে এলে স্থানীয় বাসিন্দারা বিল্টুকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ লালবাজারে গিয়ে অভিযুক্তকে আটক করে। পাশাপাশি আরও দু’জনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এই প্রতারণা চক্রের অন্যদের খোঁজ করছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, জেরায় প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন বিল্টু। যদিও তাঁর দাবি, ‘‘রেলের চাকরি নয়। রেলের এক ঠিকাদার সংস্থায় চাকরির কথা বলেছিলাম। তার বিনিময়ে অনন্তকিশোরের কাছ থেকে সাড়ে ২২ হাজার টাকা নিয়েছি। ১০ অক্টোবরের মধ্যে অনন্তকিশোরকে সে চাকরি করিয়ে দেব।’’