migratory birds

পরিযায়ী চেনাতে বোর্ড বক্রেশ্বরে

যাঁরা পাখি নিয়ে চর্চা করেন, পাখির ছবি তোলেন তাঁরা তো বটেই, কয়েক মাসের অতিথিদের দেখতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২২ ০৯:০৮
Share:

বক্রেশ্বরে নানা পাখির ছবি বোর্ডে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

আদিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি। তার গা ঘেঁষে বাঁধের উপরে দিয়ে রাস্তা। তার পাশে লাগানো হয়েছে বেশ কয়েকটি বোর্ড। সেগুলিতে সাঁটা একটি করে পাখির ছবি। সেখানে ইংরেজি ও বাংলায় পাখির সাধারণ ও বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া আছে।

Advertisement

শীতে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধার নীল নির্জন সংলগ্ন এলাকায় আসা পরিযায়ী পাখিদের চেনাতে এমনই ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বা পিডিসিএল।

শীতের সময়ে উত্তর গোলার্ধের ঠান্ডা অঞ্চল থেকে ভারতে উড়ে আসে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। জেলাও এর মধ্যে বেশ কিছু পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে। জেলার যে সব জলাশয়ের পাশে তাদের অস্থায়ী আস্তানা তৈরি হয়, তার মধ্যে অন্যতম বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নীল নির্জন।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরে বন দফতরের তত্বাবধানে হওয়া পাখি সুমরির তথ্য বলছে, শুধু নীল নির্জন জলাশয়ে পরিযায়ী ও স্থানীয় মিলিয়ে ২৩ প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে বড়ি হাঁস (বারহেডেড গুজ়), ব্রাহ্মণী হাঁস (রুডি শেলডাক), খুন্তে হাঁস (নর্দার্ন শোভেলার), লেসার হুইসলিং, রাঙা মুড়ি হাঁস, ইউরেসিয়ান কুট, গ্রিবের মতো পরিযায়ীরা। পাশাপাশি, দেখা মিলেছে দেশজ সরাল, বালি হাঁস, নানা জাতের পানকৌরি, কমন কুট, জলপিপি, জলময়ূরের মতো পাখিদেরও। এ ছাড়া ডাঙায় দেখা মেলে ব্লু থ্রোট, মোহনচূড়া, ব্ল্যাক রেডস্টার্ট, ব্ল্যাক নেক ওরিয়লা (কালো ঘাড় বেনে বৌ), হলুদ খঞ্জন, নল ফুটকি-সহ নানা পাখির।

ঘটনা হল, পুরোপুরি পর্যটন কেন্দ্র না হওয়া সত্ত্বেও, গোটা শীতকাল জুড়ে শান্ত জলাধারকে ঘিরে পিকনিক পার্টির ভিড়, ফাঁসজাল ফেলে মাছ ধরা, নৌকা চালানো, চোরাশিকারের উপদ্রব-সহ নানা কারণে ক্রমশ কমছিল ভিন‌্দেশি অতিথিদের সংখ্যা। বন দফতর সেটা রুখতে নিয়মিত প্রচার অভিযান চালায়। অন্য দিকে, বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ আগেই সেখানে সাঁতার কাটা, মাছ ধরা ইত্যাদি নিষিদ্ধ করে বোর্ড লাগিয়েছে। এ বার পাখি চেনাতে বোর্ড লাগানোকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন পক্ষীপ্রেমীরা।

যাঁরা পাখি নিয়ে চর্চা করেন, পাখির ছবি তোলেন তাঁরা তো বটেই, কয়েক মাসের অতিথিদের দেখতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষও। কিন্তু পক্ষীপ্রেমী বাদ দিলে কোন পাখির কী নাম, সেটা অনেকেই জানেন না। কোনটি পরিযায়ী পাখি সে ধারণাও অনেকের নেই। সেই অসুবিধা দূর করতেই, বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুত কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে।

বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেছি কয়েকটা বোর্ড দিয়ে সেই পাখিগুলিকে সকলকে চেনাতে। তবে যেহেতু ওটা বাঁধের উপরের রাস্তা, বোর্ড লাগানোয় কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না দেখে নিয়ে, আরও বোর্ড লাগানোর ভাবনা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement