জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরে মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু।—নিজস্ব চিত্র
শপথ নিয়ে ফিরেই জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরে ঢুঁ মারলেন ওই দফতরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। শুক্রবার দুপুরে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে আচমকাই ওই দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে মন্ত্রীর কনভয়। দফতরে ঢুকে পড়েন সন্ধ্যারানি টুডু। করণিক বিভাগে একবার উঁকি মেরে সোজা চলে যান আধিকারিক নিখিলেশ মণ্ডলের ঘরে।
আধিকারিকের ঘরে টেবিলে রাখা ফাইল টেনে দেখতে শুরু করেন মন্ত্রী। ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের সাইকেল জেলার সব পড়ুয়া পেয়েছে কি না সেই বিষয়ে খোঁজ নেন। ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের সাইকেল বিলি নিয়ে নির্বাচনের আগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে পুরুলিয়া ২ ব্লকের গেঙাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সাইকেল না পেয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল। তার আগে জয়পুরেও সাইকেল না পেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের একাংশ স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল। ক্ষোভ সামাল দিতে স্কুলে ছুটে আসতে হয়েছিল বিডিওকে।
দফতরের আধিকারিক মন্ত্রীকে জানান, জেলার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরত ৮৯,৫২৫ জন পড়ুয়ার প্রকল্পের সাইকেল পাওয়ার কথা। তাদের মধ্যে দু’ হাজার জন বাদ দিয়ে বাকিরা সবাই সাইকেল পেয়ে গিয়েছে। মন্ত্রী তাঁকে বকেয়া সাইকেল দ্রুত পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিভিন্ন গ্রামে আদিবাসীদের জাহেরথানগুলির জমি ধর্মস্থান হিসেবে নথিভুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কাজ কেমন চলছে খোঁজ নেন মন্ত্রী। আধিকারিক জানান, জেলা জুড়ে ৭০টি জাহেরথানকে নথিভুক্ত করার হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন ব্লকের আদিবাসী ছাত্রাবাস সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে নিখিলেশবাবু জানন, মানবাজার ১ ব্লকের রামনগরে তপশিলি উপজাতির ছাত্রীদের, ঝালদায় তপশিলি জাতির ছাত্রদের এবং বরাবাজারে তপশিলি জাতির ছাত্রীদের জন্য হস্টেল তৈরি হয়ে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া পুরুলিয়া ২ ব্লকের বেলমাতে এবং পুরুলিয়া ১ ব্লকের গাড়াফুসড় গ্রামে দু’টি ছাত্রবাস নির্মাণের কাজ চলছে। নিখিলেশবাবু মন্ত্রীকে জানান, তাঁরা জেলায় আরও ১০টি ছাত্রাবাস নির্মাণের প্রস্তাব রেখেছেন।
আদিবাসী শংসাপত্রের জন্য কত আবেদন বকেয়া আছে সেই বিষয়েও খোঁজ নেন মন্ত্রী। নিখিলেশবাবু জানান, এই মূহুর্তে জেলা জুড়ে প্রায় হাজার তিনেক বকেয়া শংসাপত্র রয়েছে। আবেদনকারীরা যাতে কোনও রকম হয়রানির মধ্যে না পড়েন তা ওই আধিকারিককে দেখতে বলেন সন্ধ্যারানিদেবী। নিখিলেশবাবু মন্ত্রীকে জানান, জেলার বাঘমুণ্ডি, বলরামপুর এবং ঝালদা ব্লকের কিছু এলাকায় আদিম জনজাতির তালিকাভুক্ত বিরহোড়রা বসবাস করেন। তাদের উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। দফতর থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যারানিদেবী বলেন, ‘‘দফতরের অধীনে কী কাজ চলছে, কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না তা জানার জন্যই কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে গেলাম।’’