মিছিলে জমায়েতের উপরে লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে আসতেই, দৌড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে রক্ষা পেলেন বিজেপি কর্মীরা। মঙ্গলবার গঙ্গাজলঘাটির অমরকাননে বিজেপি কর্মীদের উপরে তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, লাঠির ঘায়ে মণ্ডল সভাপতি নেতা-সহ চার বিজেপি কর্মী জখম হয়েছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজেপি-র তরফে ঘটনাটি নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ অমরকাননে বিজেপি-র কর্মীরা গুজরাত ও হিমাচলে দলের সাফল্যে বিজয় মিছিল করছিলেন। ওই মিছিলেই তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ। বিজেপি-র গঙ্গাজলঘাটি মণ্ডল সভাপতি জয়ন্ত ওরফে ভাস্কর লাহা জানান, মিছিলে প্রায় একশো জন বিজেপি কর্মী ছিলেন। সকলে জড়ো হয়ে সবে মাইকে স্লোগান দিতে শুরু করেছেন, ঠিক সেই সময়েই লাঠি নিয়ে হামলা চালায় জনা পঞ্চাশেক তৃণমূল কর্মী। ভাস্করবাবুর অভিযোগ, “গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জীতেন গড়াইয়ের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। মারতে মারতে ওরা বলছিল ‘এখানে তৃণমূল ছাড়া কিছু চলবে না’। আগাম পরিকল্পনা করেই এই হামলা করা হয়েছে।”
তিনি জানান, মিছিল সামলাতে পুলিশ কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ কর্মীদের সামনেই হামলা করে তৃণমূলের লোকজন। পরে পুলিশেরই সাহায্যে বিজেপি কর্মীরা অমরকাননে গঙ্গাজলঘাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে পড়ে রক্ষা পান। ভাস্করবাবু বলেন, “আমরা হাসপাতালে ঢুকে পড়ার পরেও মারমুখী তৃণমূল কর্মীরা হাসপাতালের মূল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের পিছনের দরজা দিয়ে আমাদের বেরিয়ে যেতে হয়।”
বিজেপি-র দাবি, এই ঘটনায় ভাস্করবাবু-সহ চার বিজেপি কর্মী অল্পবিস্তর চোট পান। সকলেই গঙ্গাজলঘাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছেন। ঘটনাটি শুনে এদিন গঙ্গাজলঘাটিতে এসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি-র বাঁকুড়া জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র। তিনি বলেন, “গঙ্গাজলঘাটিতে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি কমে গিয়েছে। মানুষ এখন বিজেপিকে সমর্থন করছেন। জমি ক্রমশ হারাচ্ছেন টের পেয়েই তৃণমূল নেতারা এখন মারমুখী হয়ে উঠেছেন।”
যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জীতেনবাবু। তাঁর পাল্টা দাবি, “হামলা চালানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। জানুয়ারিতে দলের পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে বড়জোড়ায়। সেই সভার প্রস্তুতিতেই একটি বৈঠক করছিলাম অমরকাননের দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে কিছু মদ্যপ বিজেপি কর্মী গিয়ে আমাদের কটূক্তি করে। আমরা কেবল তারই প্রতিবাদ করেছি।” পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের ঝামেলা নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।