টলিউডের সিনেমায় সুর জেলার পুলিশকর্তার

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে চলা ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’ ছবিতে তন্ময়ের একটি গান ব্যবহার করেছেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য।

Advertisement

সুজিষ্ণু মাহাতো

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫২
Share:

নবরূপে: পরিচালক প্রদীপ্তর (বাঁ দিকে) সঙ্গে তন্ময়। নিজস্ব চিত্র

পেশাই নিয়ে নেয় সময়ের বেশিরভাগটা। তবে নেশা পিছু ছাড়ে না। ছোটবেলার সেই নেশা, গানকে ভোলেননি বীরভূমের পুলিশকর্তা তন্ময় সরকার। কাজের ফাঁকে যতটুকু সময় পেয়েছেন, চালিয়ে গিয়েছেন গানের চর্চা। এ বার সেই নেশার জোরেই বড়পর্দায় অভিষেক হচ্ছে ‘গীতিকার-সুরকার’ তন্ময়ের, যিনি এখন কর্মসূত্রে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( বোলপুর)।

Advertisement

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে চলা ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’ ছবিতে তন্ময়ের একটি গান ব্যবহার করেছেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য। তন্ময় বলছেন, ‘‘ভাল লাগত, তাই গান করে যেতাম। তবে একেবারে সিনেমার জন্য গান লিখব, ভাবিনি।’’ প্রদীপ্তর সঙ্গে তন্ময়ের আলাপটাও সিনেমার মাধ্যমেই। প্রদীপ্তর প্রথম ছবি, ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’ দেখতে কলকাতার প্রিয়া সিনেমা হলে গিয়েছিলেন তন্ময়। সেখানেই প্রদীপ্তকে দেখে আলাপ করেন তিনি। তারপরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল দু’জনের। প্রদীপ্তর আদি বাড়ি নদিয়ার তেহট্টে। আবার তন্ময় কাজের সূত্রে নদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) হয়ে গেলে দু’জনের যোগাযোগ আরও বাড়ে।

তন্ময় বলছেন, ‘‘কলেজ জীবন থেকেই গান আমার নেশা। আমাদের গানের দলও ছিল। চাকরি শুরু করার পরে অবশ্য সেই দল ভেঙে যায়। তবে কাজের ফাঁকে ফাঁকে কোনও গান তৈরি করলে সেটা মোবাইলেই রেকর্ড করে পরিচিতদের পাঠাতাম।’’ তেমনই এই গানটিও প্রদীপ্তদকে পাঠিয়েছিলেন তন্ময়। সেটা ২০১৬ সাল। প্রদীপ্ত শুনেই জানান, গানটা তিনি কখনও ব্যবহার করবেন। প্রদীপ্ত বলছেন, ‘‘এর আগে একটা টেলিছবিতেও আমি তন্ময়ের গান ব্যবহার করেছি। তবে বড় পর্দায় এই প্রথম। তন্ময়ের একাধিক গান রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করার মতো।’’

Advertisement

‘পথ হারিয়ে সময় গেছে থেমে, পড়েছি আমি তোমার প্রেমেরও প্রেমে।’—তন্ময়ের লেখা, সুর করা কীর্তন আঙ্গিকের এই গানটিতেই পর্দায় দেখা যাচ্ছে অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার দিন দু’য়েকের মধ্যেই গানটি প্রশংসা কুড়িয়েছে অনেকের। তন্ময় বলছেন, ‘‘আসলে গানের সুরে একটা মাটির ছোঁয়া রয়েছে। যে ছোঁয়া আমি পেয়েছি কাজের সূত্রে বাংলার নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে। যেমন নদিয়ায় যদি না আসতাম, হয়তো এই সুর তৈরি করতেই পারতাম না।’’

তবে পুলিশকর্তা তন্ময়ের এই সত্তা কিন্তু জানেন না তাঁর পরিচিত প্রায় কেউই, এমনকি তাঁর সহকর্মীরাও। তন্ময় বলেন, ‘‘আমি পেশা ও শখ— এই দুটো জগৎ একেবারে আলাদা রাখি। যদি কেউ আমাকে গানের দিক থেকে বিচার করতে চান, তাহলে গানের নিরিখেই করুন। পুলিশের কাজ করেও গান করি বলে আলাদা সম্ভ্রম আমি চাই না।’’

কিন্তু পুলিশ থেকে একেবারে ‘পেশাদার’ গানের দুনিয়ায় এসে পড়ার পরে কি নেশাকে আরেকটু বেশি সময় দেবেন? তন্ময়ের জবাব, ‘‘দেওয়া তো উচিত, দেখি কী হয়!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement