—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বুধবার সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশাকর্মীদের মাসে ৭৫০ টাকা বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছেন। এর পরে এ দিনই রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতি তুলে নিয়েছেন আশাকর্মীরা। কিন্তু এতে খুশি নন অধিকাংশ আশাকর্মী। তাঁদের অভিযোগ, এই বৃদ্ধির পরেও কাজের অনুপাতে তাঁদের বেতন অনেকটাই কম। মাসিক বেতন অন্তত দশ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, মাসিক বেতন বৃদ্ধি-সহ একগুচ্ছ দাবিতে গত পয়লা মার্চ থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়ন। সে মতো আশাকর্মীদের বড় অংশ সরকারি সমস্ত রকম কাজ থেকে গত কয়েক দিন নিজেদের সরিয়ে রেখেছিলেন। এমনকি, ৪ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পালস পোলিও টিকাকরণের কাজেও যোগ দেননি আশাকর্মীদের বড় অংশ। আশাকর্মীদের ক্ষোভের আঁচ পাওয়ার পরেই মঙ্গলবার কলকাতার স্বাস্থ্য ভবনে আশাকর্মীদের ইউনিয়নের নেতৃত্বের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসেন রাজ্যের একাধিক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও আশা প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা৷ সেখানে আশাকর্মীদের ২৫ দফা দাবির মধ্য থেকে বেশ কিছু দাবি মেনেও নেওয়া হয়।
মঙ্গলবারই আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি সম্পর্কে দ্রুত ঘোষণা করা হবে। তাঁরা যে ইনসেনটিভ পান, তা ভাগ করে না দিয়ে এক সঙ্গে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, মোবাইল রিচার্জ বাবদ তাঁদের একটি নির্দিষ্ট অর্থ দেওয়ার বিষয়ে আধিকারিকেরা সহমত হন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
একই সঙ্গে আগামী দিনে মা ও শিশুর দেখভাল ছাড়া অন্য সরকারি কাজে তাঁদের যুক্ত করা হবে না বলেও মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানান পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের বীরভূম জেলা সম্পাদক মাধবী সিংহ।
এ দিন মাধবী বলেন, “আমাদের কিছু দাবি আধিকারিকেরা মেনে নিয়েছেন। কিছু দাবি এখনও মানা হয়নি। তবে আমাদের আন্দোলনের যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল, তার প্রমাণ এ দিনের ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা। তবে আমরা অন্তত মাসিক ভাতা দশ হাজার টাকা করা হবে বলে আশা করেছিলাম। যে পরিমাণ ভাতা বাড়ান হয়েছে, তাতে আমরা একেবারেই খুশি নই। আমরা এখন কাজে যোগ দিলেও আশা করব মুখ্যমন্ত্রী আমাদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি আরও মানবিকতার সঙ্গে বিবেচনা করবেন।”
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বার বার বলছি মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেকটি মানুষের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যের কথা বিবেচনা করেন। উনি নিজের সামর্থ্যের বাইরে বেরিয়েও সাধারণ মানুষের দাবি মেটানোর চেষ্টা করেন। ওঁদের দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রী সাধ্যমতো ভাতা বৃদ্ধি করেছেন৷ আগামী দিনে নিশ্চয় আরও সুযোগ, সুবিধা প্রদান করবেন।”
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘আমাদের খুব ভাল লাগছে আশাকর্মীরা আবার কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে আমাদেরও যেমন সুবিধা হল, তেমন সাধারণ মানুষও অনেক উপকৃত হবেন। আমরা সব সময় চাই, আশাকর্মীরা যে ভাবে আমাদের সব কাজে যুক্ত থাকে, সে ভাবেই থাকুক।’’