শিল্পসামগ্রী রং করার ব্যস্ততা। বিষ্ণুপুর মেলায় শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।
ভিড় হচ্ছে বিষ্ণুপুর মেলায়। কিন্তু বিক্রিবাটা বিশেষ হচ্ছে না বলে দাবি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ৩৩তম বিষ্ণুপুর মেলা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের মাটির জিনিস নিয়ে এসে রামানন্দ মঞ্চের মাঠে বসেছেন সুধীর হালদার। তিনি বলেন, “তিন বছর ধরে এই মেলায় আসছি। অন্য বার এক দিনে যা বিক্রি হত, এ বছর তিন দিনেও সেটা হয়নি। অবশ্য করোনা-পরিস্থিতিতে অন্য জায়গার মেলা তো বন্ধ হয়ে আছে। সে দিক থেকে এখানে যে মেলা হচ্ছে, সেটাই অনেক। শেষ দিনগুলোর দিকে তাকিয়ে আছি এখন।” একই ধরনের জিনিসপত্র নিয়ে পাশেই বসেছিলেন কৃষ্ণনগরের বরুণ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মেলায় লোকজন ভালই হচ্ছে। কিন্তু কেনাকাটার মর্জি নেই তাঁদের।’’
তিন দিন মেলা ঘুরে দেখা গিয়েছে, ভিড় রয়েছে খেলনা, ব্যাগ, বই, হরেক-জিনিস আর খাবারের দোকানগুলিতে। তবে হস্তশিল্পের দোকানগুলি খাঁ-খাঁ করছে। ফাঁকা পড়ে রয়েছে ম্যাজিক শো আর পাথরের জিনিসপত্রের দোকানগুলি। ভিড় নেই মোরব্বা আর বাদাম পাটালির ছোট দোকানগুলিতে। পুরুলিয়া থেকে এসেছেন মোরব্বা বিক্রেতা শেখ মেহবুব। তিনি বলেন, “বিক্রি নেই। এ দিকে মেলা কমিটিকে দিতে হবে রোজ ৩০০ টাকা। লোকসান করে তো আর ব্যবসা করা যাবে না। তাই ভাবছি বাড়ি ফিরে যাব।’’ বিক্রিবাটা হচ্ছে না বলেই জানান মুর্শিদাবাদ থেকে আসা মালপোয়া বিক্রেতা আনন্দ মণ্ডল। তবে ঘুগনি আর পাপড়ি চাটের দোকানগুলি ছিল ভিড়ে ঠাসা।
কিছু দোকানদারকে মাস্ক ছাড়া দেখা গিয়েছে মেলায়। তবে মহকুমা প্রশাসনের কর্মীদের দাবি, নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে। কাউকে মাস্ক ছাড়া দেখলেই ধরে পরানো হচ্ছে। খাবারের বিক্রেতারা যাতে হাতে দস্তানা পরেন, তা-ও দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেক পর্যটক। বীরভূম থেকে সপরিবার মেলায় এসেছেন অনল বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমানের শ্রীপল্লি থেকে অরুণ হালদার, গড়বেতা থেকে গণেশ অধিকারী। তাঁরা বলেন, “প্রশাসনের স্বাস্থ্য-সচেতনতা প্রশংসনীয়। তবে আমাদেরও সতর্ক থাকা দরকার।”