উদ্বোধনের পরে চিত্রশালা ঘুরে দেখছেন উপাচার্য। —নিজস্ব চিত্র
নতুন বছরে পর্যটক এবং রবীন্দ্রানুগারীদের একটি স্থায়ী চিত্রশালা উপহার দিল বিশ্বভারতী।
রবীন্দ্রভবনের উদ্যোগে শান্তিনিকেতনের ‘বিচিত্রা ভবনে’ ওই চিত্রশালায় রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি, চিঠি এবং নানা আলোকচিত্রের প্রতিলিপি ঠাঁই পেয়েছে। বুধবার সকালে ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম থেকে বিশ্বভারতী’ শীর্ষক ওই চিত্রশালার উদ্বোধন করেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। এ দিনই ‘পুথি ও তার পরিচয়’ নামে একটি পুস্তক এবং ‘রবীন্দ্রনাথ টেগোর অ্যান্ড হিজ সার্কেল’ নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশিতও হয়। এ দিনই সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য চিত্রশালা খুলে দেওয়া হয়েছে। ওই চিত্রশালা কার্যত ব্রহ্মচর্যাশ্রম থেকে বিশ্বভারতী পর্ব পর্যন্ত সময় অনুযায়ী ধারাবাহিক ইতিহাস ছবিতে এবং পাণ্ডুলিপিতে তথ্য-সহ তুলে ধরা হয়েছে। চিত্রশালায় রবীন্দ্রনাথ এবং ঠাকুর পরিবার-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির আলোকচিত্র এবং বিশ্বভারতী ও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কিত একাধিক পাণ্ডুলিপির প্রতিলিপির আলোকচিত্র নিয়ে মোট ৭৫টি জিনিস স্থান পেয়েছে। তাতে যেমন রয়েছে, রবীন্দ্রনাথের বই পাঠ্যপুস্তক হিসেবে মনোনীত না হওয়ার বিষয় নিয়ে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠি, তেমনই রয়েছে বিশ্বভারতী নিয়ে তাঁর বহু বিশিষ্ট জনকে লেখা চিঠিও। রয়েছে ভুবনডাঙার জমিদারের কাছে থেকে জমি কেনার কাগজ এবং ১৮৮৮ সালের ট্রাস্ট ডিডের আলোকচিত্র।
চিত্রশালা উদ্বোধনের আগে প্রতি বছরের মতো এ দিন ভোরে বৈতালিক এবং সকালে উপাসনা মন্দিরে ব্রহ্ম উপাসনার মধ্য দিয়ে শান্তিনিকেতনে নববর্ষ উদযাপন শুরু হয়। বিশ্বভারতী কর্মী পরিষদের উদ্যোগে নববর্ষ উপলক্ষে পুরনো ঘণ্টাতলায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়। ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকশিক্ষিকারা তাতে যোগ দেন। নাট্যঘরে অলোক চট্টোপাধ্যায়ের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হয়েছে। সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীর শিক্ষাসত্রের ছাত্রছাত্রীরা গৌরপ্রাঙ্গনে রবীন্দ্রনাথের ‘তাসের দেশ’ নাটক অভিনয় করেছেন। বস্তুত, এ দিন সকাল থেকেই দেশিবিদেশি রবীন্দ্রানুরাগী পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা শান্তিনিকেতন কার্যত উৎসব মুখর ছিল।