রুক্ষ: সেচের ব্যবস্থা নেই। এ ভাবেই শুকিয়ে যাচ্ছে আনাজের খেত। নিজস্ব চিত্র
বর্ষার মুখ চেয়ে বিঘার পর বিঘা জমিতে লাগানো হয়েছে কুমড়ো। গাছ হয়েছে ভালই। সবে ফলনও এসেছে। কিন্তু কাঠফাটা রোদে পুড়ে যাচ্ছে ফুল। ঝলসে গিয়েছে গাছের ডগা। মুশকিলে পড়েছেন বিষ্ণুপুরের রাজপুর গ্রামের চাষিরা।
বাঁকাদহ পঞ্চায়েতের পিয়ারডোবা লাগোয়া রাজপুর গ্রাম। প্রতি বছর এই সময়টায় বাসুদেবপুর ও রাজপুরের চাতাল ভরে থাকত কাঁচা কুমড়োয়। আক্ষেপ করছিলেন স্থানীয় চাষি কামেজুদ্দিন মণ্ডল, রসিদ দালাল, মোক্তার খানেরা। ৪০ বছর ধরে বর্ষায় কুমড়ো চাষ করছেন বলে জানাচ্ছেন ওই এলাকার চাষিরা। বৃদ্ধ রসিদ দালাল বলেন, “বিঘা প্রতি প্রায় ১১ হাজার টাকা খরচ পড়ে। নয় নয় করে হলেও ২০ কুইন্টাল কুমড়ো হয়। খরচা বাদে বিঘা প্রতি ৮ হাজার টাকা মতো লাভ থাকে।’’
চাষিরা জানাচ্ছেন, জমি সমতল নয়। সেচের কোনও ব্যবস্থা নেই। থাকলেও জল সমান ভাবে জমিতে দেওয়া যেত না। বর্ষার মুখ চেয়ে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। বৃষ্টি না হলে এলাকার প্রায় ১০ হাজার চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে চাষ করতে নেমেছেন বলে জানান কামাজুদ্দিন মণ্ডল, হাকিম খাঁ, আনারুল মণ্ডলের মতো অনেকেই। কেউ আবার সমিতির কাছে ঋণ নিয়েছেন। এখন কুমড়ো, ঝিঙে, বরবটি, পটল, কুঁদরির মতো সমস্ত চাষেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা।
বিষ্ণুপুর মহকুমা কৃষি দফতরের আধিকারিক হেমন্ত নায়েক জানান, বিষ্ণুপুর ও পিয়ারডোবার আনাজ বাজারের বেশির ভাগটাই আসে রাজপুর থেকে। রাজপুরের কুমড়ো রাজ্যের বাইরেও রফতানি হয়। বৃষ্টির উপরে নির্ভরশীল চাষিরা সঙ্কটে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই সমস্ত এলাকার অধিকাংশ কুমড়ো খেতে সেচ ব্যবস্থা নেই। দু’চার দিনের মধ্যে বৃষ্টি হলেও কিছুটা ফলন পেতে পারে চাষিরা। তবে প্রথম দফার ফুল নষ্ট হয়ে যাবে।”