প্রতীকী ছবি।
পৌষমেলা এ বছর হবে না বলে আগেই জানিয়েছে বিশ্বভারতী। কিন্তু, পৌষেই বিকল্প মেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে বোলপুরে। চিরাচরিত বিশ্বভারতীর মেলার মাঠে নয়, বরং সব ঠিকঠাক থাকলে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে আয়োজিত হতে পারে নবকলেবরের ওই মেলা। তবে, বীরভূম জেলা প্রশাসনের তরফে এ বিষয়ে এখনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি।
স্থানীয় হস্তশিল্পীদের আয়ের অন্যতম উৎস এবং রবীন্দ্র-ঐতিহ্য বজায় রাখার কথা ভেবে ‘বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ’ গত ৭ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসনের কাছে মেলা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। একই সঙ্গে মেলা আয়োজনের জন্য ২২ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্য সরকারের অধীন বোলপুর ডাকবাংলো মাঠ ব্যবহারেরও অনুমতি চাওয়া হয়।
এই আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জেলা পরিষদে একটি বৈঠকে বসেন জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের মেন্টর-সহ একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আবেদনকারীদের সম্পূর্ণ পরিকল্পনা খতিয়ে দেখে তবেই মেলা আয়োজনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বীরভূম জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ বলেন, “অতিমারি পরিস্থিতিতে শহরের কেন্দ্রস্থলে মেলা আয়োজনের আবেদন করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও পরিকাঠামো খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অতিরিক্ত জেলাশাসককে (জেলা পরিষদ) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সব্যসাচী সরকার বলেন, “মেলা মাত্রই যেহেতু প্রচুর জন সমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে, সেক্ষেত্রে আবেদনকারীরা ভিড় নিয়ন্ত্রণ, শৌচালয়, পার্কিং, স্যানিটাইজ়েশন, দূরত্ববিধি মানা-সহ অন্যান্য বিষয়ে ঠিক কী কী পরিকল্পনা নিয়েছেন, তা জানার পরেই অন্তিম সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।’’
সূত্রের খবর, হাতে সময় যেহেতু একেবারেই নেই, তাই আজ, বুধবার বিকেল তিনটেয় প্রস্তাবিত মেলার সম্পূর্ণ পরিকল্পনা-সহ আবেদনকারীদের জেলা পরিষদে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে। এই বৈঠকের পরেই মেলার ভাগ্য নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে, অনুমতি পাওয়ার বিষয়ে আবেদনকারীরা আশাবাদী। ‘বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের’ সভাপতি সামিরুল ইসলাম বলেন, “সম্পূর্ণ করোনা বিধি মেনেই আমরা মেলা পরিচালনা করতে চাই। ৩০০ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও প্রস্তুত আছে। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতিও এই পরিকল্পনায় আমাদের পাশে আছে। আমাদের সম্পূর্ণ পরিকল্পনা দেখে আশা করি, প্রশাসন অনুমতি দেবে।’’ বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ সুব্রত ভকতের কথায়, ‘‘মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে বড় মাপের একটি মেলা আয়োজন করা অত্যন্ত কঠিন। তবে, বুধবারই যদি অনুমতি মেলে এবং আনুষঙ্গিক প্রশাসনিক সহযোগিতা পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে আমরা নিশ্চয় মেলা আয়োজন করতে পারব।’’
আপাতত বল জেলা প্রশাসনের কোর্টে। অনুমতি মিললে বোলপুর পেতেই পারে অন্য এক ‘পৌষমেলা’!