সভার ফাঁকে স্থানীয় এক মহিলার কাছ থেকে এলাকার অসুবিধার কথা শুনছেন অনুব্রত। —নিজস্ব চিত্র।
এত দিন পুরভোটের প্রচার সীমিত ছিল প্রার্থীদের সমর্থনে দেওয়াল লিখন-ফ্লেক্স-ব্যানার, বাড়িতে বাড়িতে প্রচার এবং পথসভা-কর্মীসভায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফের বেফাঁস মন্তব্য করে পুরভোটের সেই প্রচারে উত্তেজনার পারদ চড়ালেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
এ দিন সিউড়ি ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত দলের একটি পথসভায় যোগ দিয়ে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে অনুব্রত বলেন, ‘‘বাবন (দীপক) দাস কোনও উন্নয়ন করেননি। উনি দাঙ্গার মুখ!’’ কম যাননি আর এক তৃণমূল নেতা বিকাশ রায়চৌধুরীও। বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিকাশের কটাক্ষ, ‘‘প্রয়োজন অনুযায়ী উনি দল বদল করেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন তাঁর কাছ থেকে উনি সুবিধা নিয়েছিলেন। উনি অকৃতজ্ঞ, গিরগিটি!’’ আর তার পরেই অনুব্রতর ওই মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা সিউড়িতে পুরভোটের দায়িত্বে থাকা রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘ওঁরা এমনটা বলে থাকলে, ঠিক করেননি। আমি দলের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’’
ঘটনা হল, যাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতারা এতটাই সরব, সেই দীপক দাস বিদায়ী পুরবোর্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর ছিলেন। মাস কয়েক আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন। তার আগে জলপ্রকল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিউড়ি পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আরও কয়েক জন কাউন্সিলরকে নিয়ে তিনি আন্দোলন করেছিলেন। শহরে যে ক’টি ওয়ার্ডে এ বার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করা হচ্ছে, এই ১৫ নম্বর ওয়ার্ড তার অন্যতম। সে দিকে ইশারা করেই অনুব্রতর মন্তব্য শোনার পরে দীপকবাবু দাবি করেছেন, ‘‘আসলে হার নিশ্চিত বুঝতে পেরেই ওঁরা মাথা গরম করে ফেলছেন। তাই গরমে ভুল বকছেন। জনতাকে মিথ্যা বুঝিয়ে নিজেদের অপরাধ ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন!’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমি যদি দাঙ্গার মুখ হই, তা হলে অনুব্রত মণ্ডল কি? শান্তির মুখ? শহরবাসী, জেলাবাসী সবাই ওঁদের প্রকৃত স্বরূপের কথা জানেন। আর যে দলের নেত্রীই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন, তাদের নেতা-কর্মীদের মুখে দলবদল নিয়ে কোনও কথা না বলাই ভাল!’’ পরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে ভুল কিছু বলেননি বলে দাবি করেছেন অনুব্রত।