অনুব্রত মণ্ডল।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই সিবিআইয়ের আতশকাচের তলায় রয়েছেন তৃণমূল নেতার ‘ঘনিষ্ঠ’ রাজীব ভট্টাচার্য। তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, অনুব্রতকে একদা ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন ব্যবসায়ী। তার প্রেক্ষিতেই রাজীব বললেন, ‘‘একজন মৃতপ্রায় মানুষকে টাকা দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। আমি কি কোনও ভুল করেছি?’’ হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি নিজে একজন সিএ। আমার কিছুই করতে পারবে না।’’
রাজীব বীরভূমের একাধিক চালকলের মালিক। পাশাপাশিই, আমোদপুরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি পদেও রয়েছেন তিনি। রবিবার আমোদপুরে তৃণমূলের তরফ মিছিল ও পথসভার আয়োজন করা হয়। সেই পথসভা থেকে রাজীব বলেন, ‘‘সিবিআই যত বার ডেকেছে, তত বার গিয়েছি আমি। আগামী দিনেও সহযোগিতা করব।’’ এর পরেই তৃণমূলকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করে রাখার প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন আরও জোরদার করতে হবে। তৃণমূলে আছি, তৃণমূলেই থাকব।’’
সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তাঁর ঘনিষ্ঠদের সম্পত্তির খোঁজ চলছিল। সেই সময়েই রাজীব তদন্তকারীদের নজরে আসেন। তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, অনুব্রতের কাছাকাছি আসার পর থেকেই রাজীবের ‘উত্থান’ ঘটেছে। একজন সামান্য লটারি বিক্রেতা থেকে রকেট গতিতে তাঁর প্রতিপত্তি ও বৈভব বেড়েছে। যা অনেকেরই নজর কেড়েছে। অনুব্রতের সঙ্গে টাকাপয়সার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা।
সিবিআই সূত্রে খবর, গত ২০২০ সালে মৃত্যু হয় অনুব্রতের স্ত্রী ছবি মণ্ডলের। ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসা বিভিন্ন হাসপাতালে করিয়েছেন অনুব্রত। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অনুব্রতের স্ত্রী নিউটাউনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন রাজীব। সেই রসিদ গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এসেছে। সেই রসিদ সম্পর্কে রাজীব জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও সিবিআই সূত্রের দাবি।