বোলপুর রেল ময়দানে অনুব্রত মণ্ডলের কল্যাণ কামনায় বিশেষ হোমযজ্ঞের ফ্লেক্স চৌরাস্তায়। ছবিঃ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
লোকসভা নির্বাচনের বছরে বীরভূমে ফের ‘সামনের সারিতে’ অনুব্রত মণ্ডল। কয়েক দিন আগেই অনুব্রতের জেল-মুক্তির প্রার্থনায় হরিনাম সংকীর্তনের আয়োজন করেছিল সাঁইথিয়া শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেস। এ বার বীরভূমের কেষ্টদা এবং তাঁর পরিবারের মঙ্গল কামনায় বিশেষ হোম যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে, সাঁইথিয়ার হরিনামের মতো এ ক্ষেত্রে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের পৃষ্ঠপোষকতায় যজ্ঞের আয়োজন হচ্ছে না। বরং আয়োজক হিসাবে রয়েছেন অনুব্রতের ‘শুভাকাঙ্ক্ষীরা’। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি বোলপুর রেল ময়দানে এই মহাযজ্ঞ হবে। প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার আগে অনুব্রত নিজেও ভোটে দলকে জেতানোর প্রার্থনায় মহাযজ্ঞ করেছেন।
সদ্য কালীঘাটে বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, তিনি ফিরে আসবেন। ফিরে এলে তাকে ফের দায়িত্ব দেওয়ার কথাও বৈঠক থেকে জানিয়েছেন তিনি। তার পর থেকেই জেলায় চাঙ্গা অনুব্রতের অনুগামীরা। তেমনই বহু ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’ এই মহাযজ্ঞ করবেন। অন্তত যজ্ঞের কথা প্রচার করে যে ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে বোলপুর শহরে, সেখানে তাই লেখা আছে।
এই মহাযজ্ঞের জন্য শহরে জুড়ে ২৫টি তোরণ এবং ২০টি হোর্ডিং লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। বোলপুর চৌরাস্তা থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে ফ্লেক্স, যেখানে লেখা, ‘বোলপুর তথা বীরভূমের রূপকার অনুব্রত মণ্ডল ও তার পরিবারের মঙ্গল কামনায় বিশেষ হোমযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে। সমস্ত শ্রেণির মানুষকে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি’। নীচে লেখা, ‘আয়োজনে অনুব্রত মণ্ডলের শুভাকাঙ্ক্ষীগণ’।
সূত্রের খবর, আয়োজকদের মধ্যে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি এবং রেল ময়দান দুর্গা মন্দির কমিটির কর্মকর্তা থেকে শুরু করে তৃণমূলের সক্রিয় নেতা-কর্মীরাও রয়েছেন। যদিও শাসকদল সামনে থাকছে না এই আয়োজনে। আয়োজকদের দাবি, সেই যজ্ঞে শামিল হতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষ আসবেন। যজ্ঞে ৫ কুইন্টাল বেল কাঠ, ৫১ কেজি ঘি, ১০০১টি বেলপাতা পোড়ানো হবে। এই যজ্ঞ করার জন্য ১১ জন পুরোহিতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের নেতা-বিধায়কেরাও এই যজ্ঞে থাকবেন বলে সূত্রের খবর। যজ্ঞ শেষে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা হচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের তরফে সুনীল সিংহ ,সুব্রত ভকত বলেন, “কেষ্টদা দীর্ঘদিন ধরে জেলায় না-থাকায় তাঁর অভাব অনুভব করছি। একই সঙ্গে জেলাতেও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তিনি ফিরে এলে আবার স্থিরতা ফিরে আসবে বলে আমরা মনে করছি। একই সঙ্গে উন্নয়নের ধারা গতি পাবে। তাই এই মহাযজ্ঞের আয়োজন।” যদিও এই যজ্ঞকে কটাক্ষ করে বিজেপি-র বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “ওঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা যতই যজ্ঞ করুন না কেন, তিনি ফিরে আসবেন না। তাঁদের এটা জেনে রাখা ভাল।’’