হুঁশিয়ারি: বোলপুরের সভায় অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
বোলপুরে শিবপুর মৌজার জমি আন্দোলন যে তৃণমূলের মাথাব্যাথার অন্যতম কারণ, তা আরও একবার স্পষ্ট হল মঙ্গলবার। এ দিন বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে দলের ব্লকভিত্তিক জনসভায় উপস্থিত নেতা, মন্ত্রী তো বটেই জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বক্তব্যেও ঘুরে ফিরে এল শিবপুরের কথা। মঞ্চ থেকে তুলোধনা করলেন সিপিএম, বিজেপিকেও।
শিবপুরের আন্দোলন নিয়ে সিপিএমকে সতর্ক করে অনুব্রত বলেন, “বীরভূম জেলার উন্নয়নে যদি কেউ বাধা দেয়, সেই শেকড়টা তুলে নেব। উন্নয়নে বাধা দিলে ছেড়ে কথা বলব না।” বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, “বিজেপি বড় লোকের দালাল। গরিব মানুষের জন্য কিছু করে না।”
দিন কয়েক আগেই শিবপুর মৌজার সাবিরগঞ্জে অনিচ্ছুক জমিদাতাদের সভা ঘিরে তেতে ওঠে সাবিরগ়ঞ্জ। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। তারপরই সেখানে গিয়ে বিরোধী নেতাদের হুমকির পাশাপাশি পুলিশকে সময় বেঁধে দিয়ে বিতর্কে জড়ান অনুব্রত। যদিও প্রকাশ্যে পুলিশকে হুমকি দেওয়ার পরেও অনুব্রতর বিরুদ্ধে কোনও মামলা রুজু হয়নি। তবে তৃণমূলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুতুবদ্দিন শেখ নামে এক চাষিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। অনুব্রতর হুমকির পর থেকেই ফের চর্চায় রয়েছে শিবপুর। এর আগেও শিবপুর মৌজায় চাষিদের একাধিক আন্দোলন হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই অনুব্রতর কাছে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সিপিএম, বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, শিবপুরের জমি আন্দোলনে ভয় পেয়েই পঞ্চায়েত ভোটের আগে সুর চড়াচ্ছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তবে প্রকাশ্যে বিরোধীদের কোনও অস্তিত্বই মানতে চাননি তৃণমূল নেতারা।
এ দিনও শিবপুরের আন্দোলনে সিপিএমের মদত দেওয়ার অভিযোগ তোলেন অনুব্রত। তাঁর হুঁশিয়ারি, “বীরভূমের উন্নয়নে যদি কেউ বাধা দেয়, তা হলে সেই শেকড়টা তুলে নেব। উন্নয়নে বাধা দিলে ছেড়ে কথা বলব না। সে যত বড়ই মস্তান হোক।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদাকেও কটাক্ষ করেন অনুব্রত। তার পাল্টা জবাব অবশ্য দিতে চাননি ওই সিপিএম নেতা। বিজেপি-র ‘অচ্ছে দিন’কে কটাক্ষ করে হিন্দিতে বক্তব্য রাখেন অনুব্রত। এ দিনের জনসভায় অনুব্রত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, বোলপুর পুরসভার কাউন্সিলর, ব্লক সভাপতি এবং বিধায়কেরা।