গেটে শুয়ে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়তে জমি দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ বাবদ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থায়ী চাকরী হয়নি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়ের। বহু বার কর্মসংস্থানের আবেদন জানিয়েও, ফল হয়নি বলে অভিযোগ। তাই এ বার মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে রঘুনাথপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল গেটের সামনে অবস্থানে বসলেন এক প্রৌঢ়া।
নিতুড়িয়ার নাড়াগড়িয়া গ্রামের বাবলি সিংহ নামে ওই প্রৌঢ়া বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের মূল গেটের সামনে শুয়ে পড়েন। ঘণ্টা দু’য়েক পরে সিআইএসএফ জওয়ানেরা তাঁকে কেন্দ্রের ভিতরে নিয়ে যান। সেখানে প্রকল্প আধিকারিকের কাছে নিজের দাবি জানান বাবলি। প্রকল্প আধিকারিক তরুণ কুমার বলেন, ‘‘এক মহিলা তথা জমিদাতা তাঁর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়ের কর্মসংস্থানের আবেদন জানিয়েছেন। সহানুভূতির সঙ্গে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
প্রৌঢ়ার দাবি, ২০০৮ সাল নাগাদ ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার সময়ে তাঁর পরিবার এক একরের কিছু বেশি জমি দেয়। কিন্তু স্বামী অসীম সিংহের স্থায়ী চাকরি হয়নি। বদলে মাসে ছ’হাজার টাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমবায় সমিতিতে কাজ করতেন তিনি। অসুস্থ হওয়ার পরে, স্বামীর সে কাজও চলে গিয়েছিল বলে দাবি বাবলিদেবীর। জানুয়ারিতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অসীমবাবুর। বাবলিদেবী জানান, স্বামীর অসুস্থতার সময় থেকেই তিনি মেয়ে আঁখি সিংহের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার দাবি ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের নানা মহলে জানান। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। প্রৌঢ়ার কথায়, ‘‘স্বামী বার্ধক্য ভাতা বাবদ এক হাজার টাকা পেতেন। মেয়ে প্রতিবন্ধী ভাতার এক হাজার টাকা পায়। সে টাকায় কোনওমতে সংসার চলছিল। স্বামীর মৃত্যুর পরে বার্ধক্য ভাতার টাকা বন্ধ হওয়ায়, সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে।’’
প্রৌঢ়ার অভিযোগ, এ দিন মেয়ের কর্মসংস্থানের আবেদন জানাতে গেলে, মূল গেটে আটকে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে তিনি মাটিতে শুয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকার লোকজন ভিড় জমান। শেষে সিআইএসএফ জওয়ানেরা হস্তক্ষেপ করেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক রবিলাল হেমব্রমের সঙ্গে কেন্দ্রের প্রকল্প আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন বাবলিদেবী ও তাঁর মেয়ে। রবিলালের দাবি, ‘‘প্রকল্প আধিকারিক দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।’’ নিতুড়িয়া ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি হরগোবিন্দ গরাইয়ের অভিযোগ, ‘‘জমিদাতাদের সঙ্গে ডিভিসি প্রতারণা করছে। আমরা ওই মহিলার পাশে আছি।’’ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ কোনও প্রতারণার অভিযোগ মানতে চাননি।