Amit Shah

জায়ান্ট স্ক্রিন, ল্যাপটপে অমিত-ভাষণ

বাঁকুড়া জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলাতেই ২৮টি মণ্ডলে জায়ান্ট স্ক্রিনে অমিতের বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০২:৪৬
Share:

ছাতনায় সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র

বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মঙ্গলবারের ‘জনসংবাদ র্যালি’-র ‘ভার্চুয়াল’ সভার জন্য বিস্তর আয়োজন করেছিলেন দুই জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় অন্তত ৫৪টি জায়ান্ট স্ক্রিন ও বেশ কয়েক হাজার ল্যাপটপের মাধ্যমে কর্মীদের এ দিন অমিতের ভাষণ শোনানোর আয়োজন করেছিল দল।

Advertisement

বাঁকুড়া জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলাতেই ২৮টি মণ্ডলে জায়ান্ট স্ক্রিনে অমিতের বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করা হয়। তার মধ্যে বাঁকুড়া শহরের রামপুর, ধর্মশালা-সহ চারটি জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছিল। ওই তথ্য দিয়ে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, ‘‘২৮টি জায়ান্ট স্ক্রিন ছাড়াও জেলার ১,৬৪৬টি বুথে ল্যাপটপের মাধ্যমে অমিতজির ভাষণ শোনানোর ব্যবস্থা করা ছিল।’’

দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহার জানান, তাঁর এলাকায় বক্তৃতা শোনানোর জন্য ২৫টি মণ্ডলে জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া ১,৫৯৯টি বুথের মধ্যে ১৫০০ বুথে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কর্মীরা বক্তৃতা শোনেন।

Advertisement

পুরুলিয়া শহরে দলীয় অফিসেও জায়ান্ট স্ক্রিন রাখা ছিল। এ ছাড়া জেলার ৪৮টি মণ্ডল কমিটিতে ল্যাপটপের মাধ্যমে কর্মীরা বক্তৃতা শোনেন। তবে পুরুলিয়ার বেশির ভাগ কর্মীই স্মার্টফোনে ভাষণ শুনেছেন বলে জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছেন।

বিজেপির ‘ফেসবুক পেজ’, ‘ইউটিউব চ্যানেল’ ও টিভিতে অমিতের বক্তৃতা সম্প্রচারিত হয়। ঘটনা হল, পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই পুরুলিয়া জেলায় বিজেপির উত্থান নজরে টানে। বাঁকুড়ায় বড় অংশেই পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। তবে যে ক’টি জায়গায় ভোট হয়েছিল, সেখানেও বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে বিজেপি ভাল ফল করে। আর লোকসভা ভোটে দুই জেলার তিনটি কেন্দ্রই তৃণমূলের কাছ থেকে কেড়ে নেয় বিজেপি। ফলে, আগামী বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এই দুই জেলার বিজেপি নেতৃত্ব আশাবাদী। যদিও তাতে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব।

এ দিনের সভার জন্য জেলায় জেলায় প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল ক’দিন আগেই। পুরুলিয়ার বিজেপি জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলায় ২,৪৯৪টি বুথেরই কর্মীরা যাতে এই ভার্চুয়াল সভা দেখতে পান, সে জন্য গত দশ-বারো দিন ধরে আমরা টানা প্রচার চালিয়েছি। জেলায় দলের ৪৮টি মণ্ডল, দলের সাতটি মোর্চা (শাখা সংগঠন) ও বুথস্তরের তিন হাজার নেতা রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যত বেশি সংখ্যক মানুষ সভা শুনতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে। সকলেই এ দিন নিজের নিজের বুথ এলাকায় সহকর্মীদের সঙ্গে এই সভা শুনেছেন।’’ দলের সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি আব্দুল আলিম আনসারি দাবি করেন, প্রতি জায়গায় অন্তত ১৫-২০ জন করে কর্মী বক্তব্য শোনেন।

পুরুলিয়ায় বিজেপি-র জেলা কার্যালয়ে বড় পর্দা লাগিয়ে এই ‘ভার্চুয়াল’ সভা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে কর্মীদের সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ তথা দলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।

বাঁকুড়ার ধর্মশালায় জায়ান্ট স্ক্রিনে বক্তৃতা শোনেন বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র, বাঁকুড়ায় সাংসদ সুভাষ সরকার প্রমুখ। সুভাষবাবু বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে অমিতজির এই উদ্যোগে দল অবশ্যই চাঙ্গা হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও ভাল সাড়া পেয়েছি।”

যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যের মন্ত্রী তথা পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো দাবি করেন, ‘‘এ ধরনের সভার মাধ্যমে রাজ্যে ক্ষমতা বদলের স্বপ্ন দেখানো মানে, কর্মীদের দিবাস্বপ্ন দেখানো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করছেন, তখন বিজেপি নেতৃত্বের এ ভাবে তাঁর সমালোচনা করা, দুর্ভাগ্যজনক।’’

তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল-ও দাবি করেন, “বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা কোথায়, কী করলেন, তা নিয়ে মানুষ ভাবিত নন। ভোট হবে বুথে। করোনা- পরিস্থিতিতে বাংলার মানুষকে কেন্দ্র যে ভাবে বঞ্চিত করেছে, তার জবাব বুথেই দেবেন তাঁরা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement